কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: আজ উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলা ঘটনার ১৭ বছর। ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ রাতে যশোর টাউন হল ময়দানে উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিনের সাংস্কৃতিক উনুষ্ঠানে বোমা হামলায় কুষ্টিয়ার ৩ সাংস্কৃতিক কর্মী রাম, রতন ও শাহ আলমসহ ১০ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় ২০০ জন। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন কুষ্টিয়ার ৩ সাংস্কৃতিক কর্মী রাম, রতন ও শাহ আলমের পরিবারসহ কুষ্টিয়ার সচেতন মহল। সেই বোমা হামলায় আহত হন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কুষ্টিয়া জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী সমর রায়।
এখনো বোমার স্পিন্টার হাতে এবং পায়ে বহন করে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভূমিকা রেখে চলেছেন সমর রায়। ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সমর রায় জানান, ৩ দিনের অনুষ্ঠান সেখানে দেশের বিভিন্ন উদীচী শাখার কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সম্মেলনের শেষ দিন। তখন মঞ্চে মাগুরার এক শিল্পী গান করছিলেন। রাত ১টা ১০ থেকে ১২ মিনিট। হঠাৎ মঞ্চের ডান পাশে বোমা বিস্ফোরিত হয়। চারিদিকে ধুয়ায় অন্ধকার। বোমার স্পিন্টার তার পায়ে লাগে। আহত হন সমর রায়। এর ৪-৫ মিনিট পর দ্বিতীয় বোমা বিস্ফোরিত হয়। আর এ ঘটনায় কুষ্টিয়ার শিল্পী রামকৃষ্ণ ঘটনাস্থলেই মারা যান। কুষ্টিয়ার আরেক শিল্পী শাহ আলমকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা নেয়ার পথে মারা যান। এর ১১ দিন চিকিৎসাবস্থায় রতন মারা যান। সমর রায় ভয়াবহ ওই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া এলাকায় থাকে বোমা হামলায় নিহত রামকৃষ্ণের পরিবার। রামকৃষ্ণের ভাই প্রদীপ কুমার রায়সহ পরিবারের লোকজন ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেন। কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডের আমলাপাড়ায় থাকে বোমা হামলায় নিহত রতন বিশ্বাসের পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে এ হত্যার বিচার দাবি করা হয়। কুষ্টিয়া শহরের চাউলের বর্ডার এলাকায় থাকে শাহ আলমের পরিবার। একই দাবি তাদেরও। বাঙালি সংস্কৃতির শত্রু জঘন্যতম এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন উদীচী শিল্পগোষ্ঠী কুষ্টিয়া জেলা সংসদের সভাপতি (পিপি) অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী।
এদিকে বোমা হামলায় নিহত কুষ্টিয়ার ৩ সাংস্কৃতিক কর্মীর স্মরণে কুষ্টিয়ার প্রধান সড়কে পৌরসভার ফান্ড থেকে ২০০৮ সালের ৬ মার্চ রাম, রতন ও শাহ আলম স্কয়ার বা স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়।