কি যে যন্ত্রণা এই পথ চলা! একটু সহানুভূতি কি পাবো না!

তাছির আহমেদ:কামরুজ্জামান কালুর শরীর থেকে দুটি পা আজ বিচ্ছিন্ন করা হবে। যাবতীয় আয়োজন প্রায় সম্পন্ন। সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়নই সহকর্মীদের সাথে নিয়ে অপারেশন করবেন।

গতকাল সন্ধায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ঠিক কামরুজ্জামান কালু তার একান্ত কষ্টের অনেক কথা বলেন। শহরতলী দৌলাতদিয়াড় এলাকার খুব পরিচিত মুখ কামরুজ্জামান কালু। একসময় খুব ভোরে পেপার পেপার মাথাভাঙ্গা পেপার বলে জোরে জোরে হাঁকাই ছিলো যার মূল কাজ। সেই কামরুজ্জামান কালু এখনো সেইভাবে জীবনজীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তুএক দূরারোগ্যব্যধি কালবোশেখি ঝড়ের মতো তার জীবনে আঘাত এনে তাকে করতে চলেছে লণ্ডভণ্ড। তাই নিরুপায় হয়ে তিন ঠাঁই নিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের বিছানায়। সহকর্মীদের ছোট ছোট সহযোগিতা এখন তার বাঁচিয়ে রেখেছে কিছুটা বেঁচে থাকার প্রেরণা।

কামরুজ্জামান কালুর নিজ গ্রাম চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়া।তিনি একজন সংবাদপত্র বিক্রেতা।দাম্পত্যের সাংসারিক জীবনে তার এক মেয়ে এক ছেলে। মেয়েটার বিয়ে হয়েছে, কিন্তু তার একমাত্র ছেলেটি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। এরই মাঝে কামরুজ্জামান কালু চলাচল করার ক্ষমতা হারিয়ে হাসপাতালে। সম্প্রতি তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংসার চালাবে কে?চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রই পিতার কর্মটা কোনো রকম চালিয়ে নেয়ার জন্য পথে নেমেছে। কিন্তু কামরুজ্জামান কালুর কী হবে?চিকিৎসার জন্য দরকার অনেক টাকা। অতো টাকা কে দেবে?মাথাভাঙ্গা পরিবার সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। সে হিসেবে গতকাল সন্ধ্যায় দামুড়হুদা সদরের দুমাথাভাঙ্গা পত্রিকা বিক্রেতা শাহীন আলম ও আক্তার হোসেন তার চিকিৎসার খরচ বাবদ তার হাতে ১ হাজার টাকা তুলে দেন। এসময় তার পাশে ছিলেন দৈনিক মাথাভাঙ্গার সার্কুলেশন ম্যানেজার মাসুদ রানা, দৈনিক মাথাভাঙ্গার ফটো-সাংবাদিক তাছির আহমেদ ও স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রিকা বিক্রেতা মিনহাজ উদ্দিন।

দুযুগ সময় ধরে এলাকার মানুষের হাতে সংবাদপত্র পৌঁছে দেয়া কামরুজ্জামান কালু এখন নিজেই বড় দুখের সংবাদ। সেই কালু এখন সংবাদ পত্রের সংবাদ হয়ে মানুষের সহযোগিতা নিয়ে বেঁচে থাকার আকুলআকুতি জানাচ্ছেন। মানুষের দয়া ছাড়া তার এখন বেঁচে থাকার রাস্তা নেই। তাই মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য- এ কথা ভেবে তিনি, দানশীল ব্যক্তিদের নিকট একটু সহযোগিতার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন।