কালি ও কলম পুরস্কার পেলেন চার তরুণ

স্টাফ রিপোর্টার: কালি ও কলম ‘তরুণ কবি ও লেখক’ পুরস্কার পেলেন চার তরুণ লেখক। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলানায়তনে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এমিরেটস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
২০১৫ সালের পুরস্কার জয়ীরা হলেন শামীম হোসেন, ইমরান হেসেন, রঞ্জনা বিশ্বাস ও সালেক খোকন। ‘ধানের ধাত্রী’ কবিতা গ্রন্থের জন্য শামীম হোসেন, কথাসাহিত্য বিভাগে ‘ধাতব সময়’ গ্রন্থের জন্য ইমরান খান, প্রবন্ধ, গবেষণা ও নাটক বিভাগে ‘বাংলাদেশের পালকি ও পালকিবাহক: নৃ-তাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক ধারা’ গ্রন্থের জন্য রঞ্জনা বিশ্বাস এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণা/প্রবন্ধ বিভাগে ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থের জন্য সালেক খোকনকে পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও সংগীতবোদ্ধা ঔপন্যাসিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য। অধ্যাপক বিশ্বজিত ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের তরুণ লেখকদের সাহিত্য চর্চাকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে সাহিত্য শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক মাসিক পত্রিকা কালি ও কলম ২০০৮ সাল থেকে তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার প্রদান করে আসছে। তিনি জানান, বাংলাদেশের পালকি ও পালকিবাহক উঁচুমানের গবেষণা গ্রন্থ পালকি ও পালকিবাহকদের নিয়ে এটিই বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম বই।
বাকি তিন লেখকের লেখনির প্রশংসাও করেন অধ্যাপক বিশ্বজিত। পুরস্কার হাতে নিয়ে রঞ্জনা বিশ্বাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, প্রথম স্কুলে যাওয়া, প্রথম বই প্রকাশ হওয়া, প্রথম মা হওয়া ও প্রথম প্রেমের পড়ার মতোই আজ আমার অনুভূতি। ১৭ বছর আগে মারা যাওয়া রঞ্জনা মা-বাবাকে এই পুরস্কার উৎসর্গের কথা জানান তিনি। শামীম হোসেন তার মাকে পুরস্কারটি উৎসর্গ করে বলেন, আমি আরও লিখতে চাই। কবিতার পঙক্তি খোঁজে পেতে চাই। আমার জন্য আপনারা দোয়া করবেন। সালেক খোকন নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, এই পুরস্কার আমার নয়। এই পুরস্কারের মাধ্যমে বিচারকগণ ১৪ জন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাকে পুরস্কৃত করেছেন, যাদের লেখা লিখে আমি এই পুরস্কার পেলাম। সালেক খোকন বলেন, আমি মূলত আদিবাসীদের নিয়ে লিখতাম। কিন্তু চারবছর আগে দিনাজপুরের এক অনুষ্ঠান শেষে একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার কথার সূত্র ধরে তাদের নিয়ে লেখা শুরু করি। লেখার পটভূমি তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠান শেষে কৃষ্ণ রায় নামে এক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আগামীকাল পত্রিকায় এই অনুষ্ঠানের নেতা-এমপিদের বক্তব্য দেখতে পাব। আমাদের (মুক্তিযোদ্ধা) কোনো বক্তব্য লেখা থাকবে না। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখালেখি শুরু করার কথা জানান খোকন। ঢাকার বাড্ডার জন্ম নেয়া সালেক খোকন বসবাস করে উত্তর কাফরুলে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ‘কালি ও কালম’ পত্রিকার প্রকাশক আবুল খায়ের ও সম্পাদক আবুল হাসনাত। অনুষ্ঠান শেষে কবিতা আবৃত্তি করে শোনান হাসান আরিফ। ২০০৮ সাল থেকে কবি ও লেখক পুরস্কার দিয়ে আসছে সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক মাসিক পত্রিকা কালি ও কলম।