উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তূজাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি

চিঠি লেখক সাত্তার গ্রেফতার : গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে আদালতে প্রেরণ

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মোর্তূজাকে দফায়-দফায় চিঠি দিয়ে সপরিবারে হত্যার হুমকি, বাড়িতে কেরোসিন দিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টা এবং কাফনের কাপড় কেনার জন্য টাকা পাঠানো চক্রের ৪ নায়কের অপরজন আব্দুস সাত্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল রোববার পুলিশ মিনাজপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে জামাত আলীর ছেলে অভিযুক্ত সাত্তারকে গ্রেফতার করে। এদিকে শুক্রবার রাতে আটককৃত ৩ জনকে গতকাল চুয়াডাঙ্গা সংশ্লিষ্ট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মোর্তূজাকে অক্টোবর মাস থেকে একদল দুর্বৃত্তদল দফায় দফায় সপরিবারে হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়িতে চিঠি ফেলে যেতে থাকে। এ ঘটনায় চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবারটি। গত ৯ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তূজা তার স্ত্রী মোশরেকা মোর্তূজাকে নিয়ে কোলকাতায় যান চিকিৎসার উদ্দেশে। দুর্বৃত্তদল ওই দিন রাতে গোলাম মোর্তূজা বাড়ির চারপাশে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার অপচেষ্টা করে। এ ঘটনার পর বাড়ি পাহারা শুরু করা হয়। রাতদিন পুলিশসহ এলাকাবাসী পাহারা দেয়ার মধ্যে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে চেয়ারম্যানের ছোট ছেলে শাওন ও তার স্ত্রী শ্রাবন্তীকে ২৫ নভেম্বর হত্যা হুমকি দিয়ে তারিখ ঘোষণা করে চিঠি দেয়া হয়। এ চিঠি ও টাকা পাওয়ার পর এ পরিবারটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

এ অবস্থার মধ্যে গত শুক্রবার রাতে নিয়মিত পাহারা চলাকালে পুলিশ দেখতে পায় পাহারাত গ্রামবাসীর একটি দলের মধ্য থেকে একজন সঙ্গোপনে চেয়ারম্যানের বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলো এবং গ্রিলের ফাঁক দিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়ির বারান্দায় কিছু একটা ছুড়ে মেরে দ্রুত পায়ে ফিরে আসছে। পুলিশের সন্দেহ হলে এ সময় তারা ছুটে এসে পাহারাদলের টিম লিডার আশরাফুজ্জামান লিটনকে (৪৫) হাতেনাতে আটক  ও বারান্দা থেকে হত্যার হুমকি দেয়া চিঠি উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে অকপটে ঘটনার জড়ি থাকার কথা স্বীকার করে। এ সময় সে পুলিশকে জানায়, সেসহ ৪ জন এ ঘটনার সাথে জড়িত। লিটনের স্বীকারোক্তিতে পুলিশ তার অপর দু সহযোগী একই গ্রামের সাধন হোসেন (২৩) ও সাইফুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেফতার করে। এসময় চিঠি লেখার মূল নায়ক আব্দুস সাত্তার পালিয়ে যায়। পলাতক আব্দুস সাত্তারকে গতকাল অভিযান চালিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে।

এদিকে পূর্বে গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে গতকাল মামলাসহ আদালতে সোপর্দপূর্বক রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে পুলিশসূত্রে জানা গেছে।

গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদে গ্রেফতারকৃত লিটন, সাইফুল, সাধন ও সাত্তারকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার হিসেবে উল্লেখ্য করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ফারুক আহমেদ। প্রতিবাদপত্রে তিনি দাবি করে বলেছেন, উল্লেখিত কেউই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তাদের সাথে জামায়াত-শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ ধরনের সংবাদ সাংবাদিকদের নিকট সরবরাহ করা হয়েছে।