আলমডাঙ্গার হারদী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদাদাবি ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগ ঃ অভিযুক্তের অস্বীকার

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও হত্যা অপচেষ্টার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। চেয়ারম্যানের ভাই হারদী গ্রামের গোলাম রসুলের ছেলে কামরুল ইসলাম সদু বাদী হয়ে হারদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজেক আলীর তিন ছেলে ওল্টু, বেল্টু ও লাল্টুসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে কামরুল ইসলাম সদু দাবি করেছেন, হারদী গ্রামের রেজেক আলীর তিন ছেলে ওল্টু, বেল্টু ও লাল্টু, পলানের ছেলে আত্তাপ, বাহার আলীর ছেলে শরিফ, আইজালের ছেলে কালু, ভিকুর ছেলে সামাদ, সিরাজুলের ছেলে শুভন, জান আলীর ছেলে হামিদুল, রাহাতের ছেলে আকর, আক্তারের ছেলে হারুন,বুড়োর ছেলে ছইরি, ওমর আলীর ছেলে উজ্জ্বল, মৃত গণির ছেলে ইসরাইল, আলাউদ্দিনের ছেলে বাইতুল, আকমানের ছেলে পিয়ারুল, গোলাপের ছেলে মিনারুল, মৃত জহুরুলের ছেলে মিনারুল, বুলুর ছেলে রুবেল, নাদুর ছেলে মিঠু, হাসিবুলের ছেলে ইয়াকুব,ইছার ছেলে রাজু, বাবর আলীর ছেলে ফিরোজ,মৃত হারেজ আলীর ছেলে আব্দুল বারী ও তমছের ফকিরের ছেলে মিনারুল ইতঃপূর্বে বিভিন্ন সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতো।

৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কামরুল ইসলাম সদু এবং হারদী গ্রামের সাখাওয়াত শেখের ছেলে রমজান, আব্দুল বারীর ছেলে রানা, মৃত কালু মণ্ডলের ছেলে শহিদ, তাহাজ আলীর ছেলে মনোয়ার হারদী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের অফিস রুমে বসে ছিলেন। এসময় ২৫ জন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জন পরিষদ ভবনের পাশের পানবরজ ও বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে আচমকা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করে। এরপর তারা লাঠিসোঁটা, রামদা, পিস্তল, চাইনিজ কুড়াল, জিআইপাইপ, হাতবোমা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ত্রাস সৃষ্টির জন্য অস্ত্রের মহড়া দেয়। এক পর্যায়ে ওল্টু হুকুম দেয়,‘শালার চেয়ারম্যানকে গুলি করে শেষ করে ফেল।’ এ কথা বলার সাথে সাথে লাল্টু মেম্বার পিস্তল বের করে খুন করার উদ্দেশে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের মাথায় ঠেকিয়ে বলে,‘শালা চেয়ারম্যানি করতে হলে আমাদেরকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। নচেত জীবনের মতো শেষ করে ফেলবো।’ তখন বেল্টু তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে পরিষদের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। চেয়ারম্যান চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে চেয়ারম্যানের ড্রয়ারে থাকা একলাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং কামরুল ইসলাম সদুসহ উপস্থিত লোকদের ওপর আক্রমণ করে। উত্তেজনাকর অবস্থায় কামরুল ইসলাম সদুসহ উপস্থিত সাধারণ মানুষ চিৎকার করলে পথচারী ও আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। লোকজনের সামনেই লাল্টু চেয়ারম্যানকে হুমকি দেয়পরিষদের হিসাব-নিকাশ আছে, বুঝিয়ে দিয়ে তো এখান থেকে যাবি। যদি হিসাব-নিকাশ না দিস বা আগামী ১০ দিনের মধ্যে চাঁদার ২০ লাখ টাকা না দিস তাহলে পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদে এলে খুন করে লাশ গুম করা হবে। এসময় লাল্টুর সাথে আসা লোকজন চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে দৌঁড়ে পালিয়ে সকলের জীবন রক্ষা পায়। এরপরও হুমকি-ধামকির মধে রেখেছে। যেকোনো মুহূর্তে কামরুলের পরিবারের ও চেয়ারম্যানের জানমালের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

জানতে চাইলে লাল্টু মেম্বার সশস্ত্র মহড়া ও চাঁদাদাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন,চেয়ারম্যান তিন-চারজন মেম্বারকে সাথে নিয়ে এবং বাকি মেম্বারদেরকে বঞ্চিত করে নিজের আত্মীয়স্বজনকে পিআইসি করে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ভাগাভাগি করেন। বঞ্চিত মেম্বাররা তার হিসেব নিতে গেলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তাই নিয়েচেয়ারম্যানের ভাই থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেন।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।