আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তোপের মুখে স্বীকার করলেন ইংরেজি শিক্ষকের পরিবর্তে ব্যাকডেটে ব্যবসায় শিক্ষক নিয়োগ

 

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে ইংরেজি শিক্ষকই নিয়োগ ও প্রধান শিক্ষকসহ ম্যনিজিং কমিটির সভাপতি অপসারণের দাবিতে ঘোলদাড়ী বাজারে মানববন্ধনের পর আবারও প্রধান শিক্ষক তোপের মুখে পড়েছেন। নিজ অফিসে বসে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে কার প্ররোচনায় এবং কিভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন তা ফাঁস করে দিয়েছেন।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষকের শূন্য পদে ব্যবসায় শিক্ষা শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলে আলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আন্দোলন শুরু করে নাগারিক সংগ্রাম কমিটি। ইংরেজি শিক্ষক নিয়োগ, প্রধান শিক্ষক ও ম্যনিজিং কমিটির সভাপতি অপসারণের দাবিতে অনড় অবস্থান নেয় তারা। গত বুধবার দুপুরে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ প্রধান শিক্ষককের করা জিডির তদন্তে আসে। স্কুলে একে একে হাজির হন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ। পুলিশ ফিরে যাওয়ার পর ম্যানেজিং কমিটির তোপের মুখে পড়েন প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বলেন সমস্যা সমাধান না করলে স্কুলে তাদের সন্তানদের পাঠাবেন না। যে টাকা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন সেই টাকা ফেরত দিতে না পারলে এলাকা থেকে টাকা তুলে ফেরত দেয়া হবে। এমনই অনেক প্রশ্নের মুখে প্রধান শিক্ষক তার নিজ অফিসকক্ষে ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্যদের ডেকে নেন। সাংবাদিক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সামনে তিনি বলেন, ইংরেজি শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগ দেখিয়ে নিয়োগটা অবৈধভাবে দেয়া ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিলো না। নতুন শাখা খুলতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সরকার নিয়োগ বন্ধ করে দিলো। কয়েকবার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েও কেউ আবেদন করেনি। শেষবারের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩ জন আবেদন করেন। জোড়গাছা গ্রামের এক ব্যক্তির কাছে থেকে ২ লাখ টাকা নিলেও সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী ৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা দিয়ে আরেকজনকে নিয়োগ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। সরকার অনেক আগেই নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছিলো তাই ব্যাকডেটে নিয়োগ দেখানো হয়েছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে বিভিন্ন রকমের যুক্তি তুলে ধরে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। এলাকাবাসী জানান, প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন অত্যন্ত সুচতুর। তিনি স্কুলে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা স্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করেতে সভাপতির পরামর্শে নতুন কৌশল অবলম্বন করছেন।

উল্লেখ্য, স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গত ১৫ মাস আগে মারা যান। গত বছরের ৮ জুন সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ইংরেজি বিষয়ে অনার্স মাস্টার্স পাস প্রার্থীগণ দরখাস্ত করলেও প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি অধিক অর্থ না পাওয়ার কারণে নিয়োগ বন্ধ রাখেন। ৭ জুন ২য় বারের মতো সহকারী শিক্ষক (ব্যবসায় শিক্ষা) শূন্য পদ না থাকলেও কৌশলে শূন্য পদ দেখিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মহিলা অবশ্যক উল্লেখ করা হয়। কিন্তু কোনো প্রার্থী আবেদন না করলে আবার নতুন করে ব্যবসায় শিক্ষা শূন্য পদে (মহিলা) আবশ্যক মর্মে বিজ্ঞপ্তি দেন প্রধান শিক্ষক। ২৭ অক্টোবর সহকারী শিক্ষক (ব্যবসায় শিক্ষা) শূন্য পদ উল্লেখ করে মহিলাদের অগ্রাধিকার ও পুরুষেরাও আবেদন করতে পারবে মর্মে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।