আপনার সম্পদ আপনাকেই রক্ষা করতে হবে

গাংনীতে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময়সভায় পুলিশ সুপার

গাংনী প্রতিনিধি: আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে আরও বেশি সজাগ থাকার পরামর্শ দিলেন মেহেরপুর পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গাংনী ইউএনও সভাকক্ষে গাংনী শহরের জুয়েলার্স ও শো-রুম মালিকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময়সভায় ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, জেলা সদরে সিসিটিভি স্থাপনের মাধ্যমে চুরি-ছিনতাই নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গাংনী শহর সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা প্রয়োজন। তবে সরকারি অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ব্যবসায়ীদের যার যার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরপত্তার পরামর্শ দেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মধ্যদিয়ে সড়ক নিরাপত্তার বিষয় তুলে ধরে তিনি।

চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে মাদকসেবীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, জেলার প্রতিটি মাদকসেবীর তালিকা তৈরি করে ডাটাবেজ করা করা হচ্ছে। কেউ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, পাসপোর্টসহ পুলিশের প্রত্যায়নের আবেদন করলে সে মাদকসেবী কি-না তা সহজেই উঠে আসছে। মাদকসেবী হলে সনদপত্রে তা উল্লেখ করা হবে। বিয়ের ক্ষেত্রে কনের পিতা যদি বর মাদকসেবী কি-না জানতে চান, তাহলে তা যাচাই করে তথ্য প্রদান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শুধুমাত্র সৌন্দর্য বর্ধনে টাকা ব্যয় না করে নিরাপত্তার জন্য অর্থ ব্যয় করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার জন্য আপনি যা ব্যয় করবেন তা বিনিয়োগ। কেননা মালিককের নিরপত্তা উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। এদেশে পুলিশ সঙ্কট রয়েছে। পুলিশের একার পক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই বাসাবাড়ি, পাড়া-মহল্লা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য স্ব স্ব মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মোটরসাইকেল চুরি প্রতিরোধে এন্ট্রি থিপ সিস্টেম (এটিএস) নিরাপত্তা লক লাগানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা অনেক টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কিনতে পারি, কিন্তু দুই হাজার টাকা খরচ করে লক লাগানো পারছি না। অপরদিকে রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে অবহেলা করি।

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে ম্যানুয়াল পুলিশিং নেই উল্লেখ করে পুলিশ সুপার আরও বলেন, সেখানে প্রযুক্তি নির্ভর পুলিশিং ব্যবস্থা থাকায় সহজেই অপরাধ দমন করা যায়। কেননা প্রযুক্তি কখনো মিথ্যা বলে না, বিকল না হওয়া পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত কাজ করতে থাকে। তাই বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধানে ব্যক্তি উদ্যোগে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কোনো বিকল্প নেই। পাড়া-মহল্লায় নৈশ প্রহরী ব্যবস্থা করারও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।

সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গাংনী উপজেলা জুয়েলারী সমিতির সভাপতি গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গাংনী গাংনী থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) কাফরুজ্জামান, প্রেসক্লাব সভাপতি রজমান আলী, সাংবাদিক মাজেদুল হক মানিক, গাংনী বাজার কমিটি সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান স্বপন, ব্যবসায়ী সাজু, জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ। দ্রুততর সময়ের মধ্যে স্ব স্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্যবসায়ীরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গাংনী শহরের জুয়েলার্স ও বিভিন্ন শো-রুম মালিকবৃন্দ।