৫ হাজার ৩০০ টাকা মজুরি মানে না শ্রমিকরা পোশাক শিল্প খাতে ন্যুনতম মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো

স্টাফ রিপোর্টার: মজুরি বোর্ডের দেয়া ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩শ টাকা প্রস্তাবেও আপত্তি জানিয়েছে পোশাক শিল্প মালিকরা। পোশাক শ্রমিক নেতারা ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে মালিকরা বলেছেন, ৫ হাজার ৩০০ টাকা দেয়ার সামর্থ্যও তাদের নেই। সরকার মজুরি বোর্ড গঠনের প্রায় পাঁচ মাস পর গতকাল সোমবার মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভায় ৫ হাজার ৩শ টাকার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়। ওই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা ভোট না দিয়েই সভা থেকে বেরিয়ে যান। মজুরি বোর্ডের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পোশাক শ্রমিক নেতা মোশরেফা মিশু বলেন, আমরা ন্যূনতম এ মজুরি প্রত্যাখ্যান করছি। ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকার দাবিতে আমরা অনড় আছি। এ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা দেন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি। ঘোষিত ন্যূনতম মজুরিকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, মালিক পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মজুরি বোর্ড ৫ হাজার ৩শ টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করেছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ৮ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবিতে সব সংগঠন ঐক্যবদ্ধ। গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা আদায় করা হবে। গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্প রক্ষা জাতীয় মঞ্চের সমন্বয়কারী তপন সাহা বলেন, ন্যূনতম মজুরিতে শ্রমিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। বোর্ড ঘোষিত মজুরিতে যাতায়াত ও খাদ্যভাতা অন্তর্ভুক্তির দাবি জানাচ্ছি। গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি লীমা ফেরদৌস বলেন, যে শ্রমিকদের শ্রমে দেশে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা আসে, সেই শ্রমিকদের বেতন কোনোভাবেই ৮ হাজার টাকার নিচে হতে পারে না।  ঘোষিত মজুরিকে শুভঙ্করের ফাঁকি আখ্যা দিয়ে এটাকে পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।এদিকে ঘোষিত মজুরিকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে শ্রমিকরা এ সিদ্ধান্ত মানবে না বলে জানিয়েছে বামপন্থি দু দল সিপিবি ও বাসদ। দু দলের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩শ টাকা নির্ধারণ অগ্রহণযোগ্য। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ৮ হাজার টাকার নিচে মজুরি হলে শ্রমিকদের কোনো রকমে খেয়ে পরে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকার জন্য আন্দোলন করছে। শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির থেকে অনেক কম দাবি করেছে। শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের পাশাপাশি গার্মেন্টস খাতকে বিকশিত করতে এ দাবি মেনে নেয়া উচিত। দাবি আদায়ে শ্রমিকদের আন্দোলনে আমরাও থাকব।