৫ দিনের মাথায় ঘাতকচক্রের সদস্য ইকরাম ও বিল্লাল গ্রেফতার :ইজিবাইক উদ্ধার

 

দর্শনা অফিস: দর্শনা-মুজিবনগর সড়কের গোপালখালী ব্রিজের অদুরে বোয়ালমারী মাঠে চালককে খুন করে ইজিবাইক ছিনতাই ঘটনার ৫ দিনের মাথায় দামুড়হুদার জয়রামপুরের ইকরামুল ও যশোরের বিল্লাল নামের দু ঘাতককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যশোর থেকে পুলিশ বিল্লালকে গ্রেফতারসহ ছিনতাইকৃত ইজিবাইক উদ্ধার করেছে। বিল্লালকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ইজিবাইক চালক তুফানকে হত্যার কথা স্বীকার করে দিয়েছে চাঞ্জল্যকর তথ্য। এ তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে জয়রামপুর মল্লিকপাড়ার ইকরামুলকে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের পুলিশ বিস্তার করেছে জাল।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা ভিমরুল্লা স্কুলপাড়ার বক্স মালিথার ছেলে তুফান মালিথা (৫০) মাস খানেক আগে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকায় কুষ্টিয়া থেকে একটি ইজিবাইক কিনেন। ইজিবাইক চালিয়ে সে উপার্জনে তুফান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেশ ভালো চালাচ্ছিলেন সংসার। গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অজ্ঞাত স্থান থেকে মোবাইল কল আসলে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে যায় তুফান মালিথা। পরের সোমবার সকালে দর্শনা-মুজিবনগর মহাসড়কের গোপালখালী ব্রিজের অদুরে বোয়ালমারী মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয় তুফানের লাশ। এ ঘটনায় তুফানের ছেলে হাফিজুল ইসলাম বাদি হয়ে দামুড়হুদা থানায় দায়ের করেন হত্যা ও ছিনতাই মামলা। তুফান হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ছিনতাইকারীচক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য জাল বিস্তার করে পুলিশ। গত শুক্রবার সকালে দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ শিকদার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দর্শনা আইসি ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালান যশোর কতোয়ালি উপজেলার শংকরপুরের শামসুর সরদারের ছেলে বিল্লালের বাড়িতে। পুলিশ বিল্লালের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে তুফানের ইজিবাইক। গ্রেফতার করেছে বিল্লালকে।

পুলিশ বলেছে, বিল্লালকে জিজ্ঞাসাবাদে তুফান হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। বিল্লাল দিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিল্লালের স্বীকারোক্তিতে জানা গেছে, উজিরপুর থেকে দর্শনায় আসার উদ্দেশে ৫০০ টাকা চুক্তি করা হয় তুফানকে। দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা হয়ে দর্শনায় আসার পথে গোপালখালী ব্রিজের অদুরে বোয়ালমারী নামকস্থানে নির্জন স্থান বুঝে তুফানকে হত্যা করা হয়। হত্যা শেষে মাঠের কাদার মধ্যে খুষে রেখে ইজিবাইক নিয়ে সটকে পড়ে ঘাতকরা। বিল্লালের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় পুলিশের একই দল অভিযান চালিয়ে দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের কাঠালতলা নামকস্থান থেকে গ্রেফতার করেছে জয়রামপুর মল্লিকপাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলে ইকরামুল ওরফে ইকরামকে (৩০)। পুলিশ বলেছে, ইকরামুকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ রয়েছে অব্যাহত। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ইকরাম ইজিবাইক চালক তুফান মালিথাকে হত্যার কথা স্বিকার করে দিয়েছে আরো তথ্য। তুফানকে গামচা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ছিনতাইকারী তুফান ইজিবাইক শংকরপুরের বিল্লালের কাছে বিক্রি করে ৮০ হাজার টাকায়। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় ৫ জন। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের স্বার্থে নাম পরিচয় গোপন রাখছে। গ্রেফতারকৃত বিল্লালকে গত শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। এ দিকে আজ সোমবার গ্রেফতারকৃত ইকরামকে পুলিশ সোপর্দ করতে পারে আদালতে। ইকরাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।