৪৫ হাজার চাকরি প্রত্যাশীর ভাগ্য ঝুলে আছে এক বছর মামলার কারণে নিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে বিআরডিবিতে

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় ৪৫ হাজার চাকরি প্রত্যাশির ভাগ্য ঝুলে আছে এক বছর। ঘটনাটি বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের। ১৩টি শ্রেণির পদে এক বছর আগে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হলেও আজও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। এতে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৪৪ হাজার ৩৮৫ চাকরি প্রত্যাশী।

সচিবালয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের করিডোরে দেখা হয় চাকরি প্রত্যাশী সিদ্দিকুর রহমানের সাথে গতকাল রোববার। এসেছেন বরগুনা জেলা থেকে। এক বছর আগে পরীক্ষার ফলাফল কি তাই জানা উদ্দেশ্য। বললেন, সর্বশেষ বয়সে চাকরির জন্য শেষ আবেদন ছিলো এটি তার। এর সাথে তার এবং তার পরিবারের ভাগ্য জড়িত। চাকরিটা হবে এমন আশা তার। কারণ পরীক্ষাও ভাল হয়েছিলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছু জানতে না পারায় অনেক হতাশায় গোটা পরিবার। তিনি জানান, বরিশাল বিএম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে অনেক চাকরির জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনোটাই হয়নি। শেষপর্যন্ত শেষ ভরসা ছিলো এটি। কিন্তু এটি বুঝি হাত-ছাড়া হয়ে যাবে। শুধু সিদ্দিক নয়, হয়তো এমন ভাগ্যের বিড়ম্বনায় অনেক চাকরি প্রত্যাশীরই। কিন্তু কে শুনবে তাদের বোবা কান্না। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় বলছেন শূন্য পদ পূরণের জন্য। এতে যেমন বেকারত্ব দূর হবে তেমনি কাজেও গতি আসবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) মহাপরিচালক আব্দুল কাইয়ূম জানান, মামলার কারণে এসব নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। যদিও তিনি বলেন, মামলাগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। যারা মামলা করেছে তারা বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়োজিত। এসব প্রকল্প নানাভাবে চালু আছে এবং তারা বেতন সুবিধাও পাচ্ছেন। অথচ মামলার আর্জিতে তারা বলছেন- সমাপ্ত প্রকল্পের জনবল তারা। এছাড়া তারা বিআরডিবিতে রাজস্ব খাতে আত্মীকরণের আবেদন করেছেন আদালতে। কিন্তু আইন অনুযায়ী বিআরডিবি সরকারের কোনো রাজস্বভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নয়। এটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। বিআরডিবির নিজস্ব কোনো প্রকল্প নেই। যেসব প্রকল্প থেকে মামলা করা হয়েছে সেসব প্রকল্প বিআরডিবি গ্রহণ করেনি এবং বিআরডিবির আইন অনুযায়ী বোর্ডের সঙ্গে তাদের কোনো চুক্তিও নেই। তিনি জানান, আদালতে জবাব দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের গৃহীত পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পসহ মোট ছয়টি প্রকল্পের কর্মচারীরা ৭০টি মামলা করেছেন তাদেরকে বিআরডিবিতে আত্মীকরণের জন্য। যদিও এসব প্রকল্প বিআরডিবির অধীন নয়। আবার বিআরডিবির কর্মচারীরাও উল্টো ৪টি মামলা করেছেন। এরমধ্যে চারটি মামলায় নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাদীপক্ষের জন্য ৬৭০টি পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদিও মোট শূন্য পদ রয়েছে ১১২টি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৫ জুন বিআরডিবি ১৩টি বিভিন্ন শ্রেণির পদের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে। এর ভিত্তিতে আবেদিত বৈধ ৪৪ হাজার ৩৮৫ জনের পরীক্ষা নেয়া হয় একই বছরের ৯ অক্টোবর। কিন্তু এরপর আর ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। যদিও ফলাফল ঘোষণার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। যেসব পদে পরীক্ষা নেয়া হয়েছিলো সেগুলো হচ্ছে: উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী, হিসাবরক্ষক, হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা প্রহরী,গবেষণা অনুসন্ধানকারী, ড্রাফটসম্যান, ক্যাশিয়ার, টেলিফোন অপারেটর, ইলেকট্রিশিয়ান ও পাম্প ড্রাইভার।