১৫ বছর পর আলোচিত হুন্ডি কাজলের ৩ বছরের জেল

স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গাসহ গোটা এলাকার বহু আলোচিত হুন্ডি ব্যবসায়ী কোটচাঁদপুরের সেই ফারুক আহমদে ওরফে কাজলের কারাদণ্ডাদেশসহ অর্থদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। দীর্ঘ ১৫ বছর পর হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ এসএম মনিরুজ্জামান গতকাল সোমবার এ রায় দেন। এ মামলায় অপর ৯৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। বর্তমানে কাজল পলাতক রয়েছে। আদালত সূত্র জানায়, গত ২০০০ সালের ২ ডিসেম্বর কাজলসহ ১৪০ জন হুন্ডির এজেন্টের বিরুদ্ধে সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক দুলাল উদ্দিন আকন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে কাজলসহ ৯৮জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন আদালতে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘ ১৫ বছরেও বহুল আলোচিত ফারুক আহমেদ ওরফে হুন্ডি কাজলের লোপাটকৃত হাজার কোটি টাকার কোনো টাকাই উদ্ধার হয়নি। তিনি এখন কোথায় সে খোঁজও নেই সরকারের কোন দফতরে। গত কয়েক বছর আগে তিনি জামিনে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আত্মগোপনে যান। আলোচিত এই কাজল কোটচাঁদপুর শহরে ক্ষুদ্র বই ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে অতিরিক্ত মুনাফার প্রলোভন দিয়ে টাকা হাতানোর ব্যবসা শুরু করেন। তিনি প্রতি লাখে ১২ হাজার টাকা করে মুনাফা দেয়ার কথা প্রচার শুরু করেন। অস্বাভাবিক মুনাফার লোভে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ কাজলের কাছে টাকা জমা দিতে থাকেন। ১৯৯৮-৯৯ সালে কাজলের প্রতারণামূলক ব্যবসায় ফুলে উঠেন। কাজল ও তার কয়েকশ এজেন্ট টাকার পাহাড় গড়ে তোলেন। সাধারণ মানুষ জায়গা-জমি বিক্রি করে তার কাছে লাখ লাখ টাকা জমা রেখে পথে বসেন। এরপর ২০০০ সালের জুনে কাজলের হুন্ডি কারবারের পতন ঘটে। তার কাছে টাকা জমাকারীদের মুনাফা দিতে ব্যর্থ হন। হাজার হাজার মানুষ কাজল ও তার এজেন্টদের বাড়িতে হামলা করে আগুন ধরিয়ে দেয়। জনরোষের হাত থেকে কাজলকে রক্ষার জন্য পুলিশ তাকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। আন্দোলনের মুখে টাকা উদ্ধারের জন্য সার্ভে কমিটি গঠন করে তৎকালীন সরকার। ওই কমিটি হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য পান। ২৮ জন এজেন্ট ২শ কোটি টাকা লোপাটের কথা স্বীকার করে। এরপর কাজল ও তার এজেন্টদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আর ওই হুন্ডি ব্যবসার বিরোধে ৩ জন এজেন্ট খুনও হন। আবার টাকার শোকে বেশ কয়েকজন আত্মহত্যা করেন। কয়েকজন লগ্নিকারী ব্যবসায়ী হৃদরোগে মারা যান। কোটচাঁদপুর থানা সূত্র জানায়, কাজলের বিরুদ্ধে এখনো বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আর তার নামে ৩টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।