১০ পৌরসভার প্রতিটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী

 

বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন ব্যালট ছিনতাই কেন্দ্র দখল

স্টাফ রিপোর্টার: বেশকিছু কেন্দ্রে ব্যালটপেপার ছিনতাই, কেন্দ্র দখল, সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও কারচুপির মধ্যদিয়ে পৌরসভার দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ পৌরসভার সব কটিতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনীর সোনাগাজী ও ঝালকাঠি- এ ৪টি পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেছেন। সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১০টি পৌরসভার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচিত মেয়ররা হলেন- নোয়াখালীর কবিরহাটে বর্তমান মেয়র জহুরুল হক রায়হান (৫,৩৭৪ ভোট), কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে আবদুল মালেক রায়হান (১০,৯৩৬), ঝালকাঠিতে লিয়াকত আলী তালুকদার (১৭,৩৪২), ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আবু রেজা মো. ফয়েজ (১০,৪০১), ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে মো. মকছেদ আলী (১২,১২৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নায়ার কবির (৬০,১৬৭),  ফেনীর সোনাগাজীতে রফিকুল ইসলাম খোকন (৮,৯৯৪), কক্সবাজারের চকরিয়ায় আলমগীর চৌধুরী (২৩,৩৫২), মকসুদ মিয়া (৮,৪৩০), হাসিবুর রহমান (১৪,৩০০)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ককটেল বিস্ফোরণ, ব্যালটপেপার ছিনতাই: ককটেল বিস্ফোরণ, ব্যালট পেপার ছিনতাই এবং বিএনপির প্রার্থীদের নির্বাচন বর্জনের মধ্যদিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ভোটগ্রহণের দিন পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ৭০ থেকে ৮০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ৫ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এদিকে এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট প্রদান, প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধর, ককটেল বিস্ফোরণসহ ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও ৭ কাউন্সিলর প্রার্থী। তারা নির্বাচন বাতিলের দাবিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিলও করে। গতকাল দুপুরে জেলা বিএনপির সভাপতি মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

নাঙ্গলকোটে বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন: বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জনের মধ্যদিয়ে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার (ধানের শীষ) গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টায় ভোট কেন্দ্র দখল, কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি, বহিরাগত ক্যাডার দিয়ে জালভোট দেয়ার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

সোনাগাজীতে ভোটকেন্দ্র দখল, আটক ১২: ফেনীর সোনাগাজীতে গতকাল ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে বহিরাগতরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্র দখল করে জালভোট দেয়। বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১০টায় বিএনপি প্রার্থী জামাল উদ্দিন সেন্টু কেন্দ্র দখল, জালভোট ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সরকারি দলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানান।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ: কয়েকটি সংঘর্ষের মধ্যদিয়ে ঝালকাঠি পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট চলাকালে ১৯ জন আহত এবং ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের লিয়াকত আলী তালুকদার ও বিএনপির প্রার্থী অনাদী দাস। জালভোট ও কারচুপির অভিযোগ এনে দুপুরে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন।

কবিরহাটে ২ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত: নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ব্যালটপেপার ছিনতাইয়ের কারণে দুইটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৬নং ওয়ার্ডের ইন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও দুপুর পৌনে ২টার দিকে ৮নং ওয়ার্ডের আলীপুর ইঞ্জিনিয়ার ইনষ্টিটিউট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বহিরাগতরা জোরপূর্বক ব্যালট ছিনিয়ে সিল দেয়। এ কারণে এ দুই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন প্রিসাইডিং অফিসাররা।