হায় হায় কোম্পানি খুলে দ্বিগুণ করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মাজু গ্রামের লাভলুর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার মাজু গ্রামের লাভলুর বিরুদ্ধে ৬ মাসে দ্বিগুণ ফেরত দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এলাকার অসচেতন ব্যক্তিদের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এইম ওয়ে করপোরেশন লিমিটেড নামে হায় হায় কোম্পানি সৃষ্টি করে এলাকাবাসীর নিকট থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে বাড়ি ও মোটরসাইকেল কিনে প্রতারক লাভলু এখন প্রকাশ্যে ঘুরছেন।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজু গ্রামের মৃত আওলাদ মণ্ডলের ছেলে লাভলু ২০১২ সালের দিকে কুষ্টিয়া শহরে ঘরভাড়া করে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। কুষ্টিয়া শহরের ভাড়া বাড়িতে তিনি এইম ওয়ে করপোরেশন লিমিটেড নামে এক হায় হায় কোম্পানি সৃষ্টি করে তার সাইনবোর্ড লাগিয়ে শুরু করেন প্রতারণা। তার হাত থেকে নিজ গ্রামবাসীও রেহাই পায়নি। গ্রামে তিনি প্রচার করেন এইম ওয়ে করপোরেশন লিমিটেডের তিনি কুষ্টিয়া অফিসের অফিসার। তার সাথে প্রতারণায় যোগ দেন গ্রামের আরও কয়েক যুবক। তার কোম্পানিতে টাকা জমা রাখলে ৬ মাসে দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেবেন তিনি। এ প্রলোভনে পড়ে গ্রামের বহু সরল-সোজা মানুষ বিশ্বাস করে লাভলুর নিকট টাকা জমা রাখে। লাভলুর নিজ গ্রাম মাজুর হায়েত আলীর ছেলে আমিরুল ইসলামের নিকট থেকে ৪২ হাজার ২শ টাকা ও একই গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে ইউনুস আলীর নিকট থেকে ৫০ হাজার ২শ টাকা হাতিয়ে নেন।

গ্রামসূত্রে জানা গেছে, একই গ্রামের মৃত আবুল বিশ্বাসের ছেলে নাজিম উদ্দীন, বোরহানের ছেলে বাইতুল, মঞ্জুর ছেলে সেলিম, বিশারতের ছেলে কালু, সিরুর ছেলে খোরসেদ, জমসেদের ছেলে জহুরুল, নারানের ছেলে জয়দেব পাল, অনীল পালের ছেলে সুবল পাল, জসিমের মেয়ে জোসনাসহ গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদিকে ৬ মাস পরে টাকা লগ্নিকারিরা ডবল টাকা চাইতে গেলে বাধে বিপত্তি। আজ দেব, কাল দেব করে লাভলু তাদের ঘোরাতে থাকে। এরই মধ্যে কুষ্টিয়া থেকে প্রতারক লাভলু গুটিয়ে নেয় তার হায় হায় কোম্পানির অফিস। রাতারাতি লগ্নিকারকদের টাকায় বাড়ি তৈরি করেন প্রতারক লাভলু। মোটরসাইকেল কিনে কাজ কর্ম না করে ঘুরে বেড়ায় আর লগ্নিকারকদের টাকা যাতে ফেরত না দিতে হয়, সে কারণে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট ধরনা দিতে থাকে। তার এ ধরনের আচরণ দেখে গ্রাহকরা গ্রামে সালিস বৈঠক করেন। সে সালিস বৈঠকে প্রতারক লাভলু আমিরুল, ইমাদুল মাস্টারের ও ইউনুস আলীর টাকা ফেরত দিতে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৩ সালের ৩ জুনের সে সালিস প্রতারক আর মানেননি। এ ঘটনার পরে আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতে প্রতারক লাভলুর নামে মামলা করেন। আদালত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের ওপর বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠাতে আদেশ দেন। ওই আদেশ মোতাবেক গত ৬ এপ্রিল তদন্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করা হয়। ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, লাভলু নিজে লাভবান হওয়ার জন্য বাদী, সাক্ষী ও গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে প্রতারণা করেছে। গ্রামের সরল-সোজা মানুষ প্রতারক লাভলুর নিকট লগ্নি করা লাখ লাখ টাকা ফেরত পেতে এখন প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে।