হাউলী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নজরুল গ্রেফতার : আলমডাঙ্গায় ৪ জন আটকের পর মুক্ত ?

দর্শনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শিবির কর্মী নিহত : পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামি ধরতে গিয়ে নামের তালিকা নিয়ে হোচট!

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দর্শনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শিবিরকর্মী রফিকুল ইসলাম নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের রুজু করা মামলার আসামিদের ধরপাকড় করতেই পুলিশকে হোচট খেতে হয়েছে। আলমডাঙ্গা এলাকার এজাহার নামীয় ৪ জনকে ধরলেও তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এজাহারে এদের নাম কীভাবে অর্ন্তভুক্ত হলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

অপরদিকে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাও. আজিজুর রহমানের ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে (৪০) পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে নিজ বাড়ি জয়রামপুর গাতিরপাড়া থেকে দামুড়হুদা থানা পুলিশ তাকে আটক করে। তিনি উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের মৃত হাজি খোদাবক্স মণ্ডলের ছেলে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবীব পিপিএম জানান, সরকারি কাজে বাধা, শিবিরকর্মী রফিকুল হত্যা ও পুলিশের ওপর হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নজরুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বিকেলেই আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

অপরদিকে জানা গেছে, মামলার এজাহারভুক্ত  ২২২ নং আসামি আলম, পিতা-আমির, ২২৪ নং আসামি কফিল, পিতা-কালু মুন্সী, ২২৯নং আসামি হাসিবুল,পিতা-মসলেম,সর্ব সাং শ্রীরামপুর ও ২৩২নং আসামি লুৎফর মুন্সী, পিতা-জুর আলী মুন্সী, সাং জগন্নাথপুর পাড়াকে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ আটক করে। গতকাল অনেক দরবার শেষে তাদেরকে আওয়ামী লীগ কর্মী বানিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাদের আটকের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন- তাদের বর্তমান অবস্থান যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে সংগৃহিত নামের তালিকায় কিছু ত্রু টি থাকতে পারে। কীভাবে ওদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

                 উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে দর্শনায় মিছিল শেষে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান চুয়াডাঙ্গা বোয়ালিয়ার রফিকুল ইসলাম। তিনি শিবিরকর্মী। এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আফজাল হোসেন বাদী হয়ে ২৮৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো তিন থেকে সাড়ে তিনশ জনের নামে মামলা দায়ের করে। আটককৃত নজরুল ইসলাম এ মামলার ৯৮নং এজাহারভুক্ত আসামি। এ নিয়ে ওই চারজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটক অপর তিনজন হলো দর্শনা হল্টচাঁদপুরের শহর আলীর ছেলে জামায়াত সমর্থক আবুবকর (৫০), একই গ্রামের আতিয়ারের ছেলে বিএনপি কর্মী সাইফুল (২৮) ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের যুগ্মআহবায়ক মঞ্জুরুল জাহিদ। একই এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করার পর ছেড়ে দেয়ায় বিষয়টি আলোচনার নতুন মোড় নিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে এজাহারে উল্লেখ করা অন্য আসামিদের নিয়েও।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের জামায়াত নেতা ডা. আশরাফুলকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ৭টায় মুক্তারপুরের মোল্লাবাড়ি বাজার থেকে তাকে আটক করেন কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রবিউল ইসলাম। আশরাফুল আলম জামায়াতের ওয়ার্ড সভাপতি।

উলেখ্য, গত ১০ অক্টোবর বিকেলে দর্শনায় নিহত হয় শিবিরকর্মী রফিকুল। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দামুড়হুদা থানায় নামে-বেনামে ৬৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আশরাফুল আলম।