স্বামীর পরকিয়ার বলি হলো নববধূ?

স্টাফ রিপোর্টার: বিয়ের বছর না ঘুরতেই ঝরে যেতে হলো শর্মিলা খাতুন নামের নববধূকে। স্বামী হাসানের পরকিয়া দেখে ফেলায় তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শর্মিলা খাতুনের মামা ও এক নানা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তার শ্বশুরবাড়ি আলমডাঙ্গার রেল জগন্নাথপুর থেকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ময়নতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

পুলিশ বলেছে, শর্মিলা খাতুনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আলমডাঙ্গা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্বামীসহ স্বামী পক্ষের লোকজন বলেছে, শর্মিলা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রতিবেশীরা অবশ্য এ দাবি মানতে না রাজ। প্রতিবেশীসূত্র বলেছে, গত পরশু বুধবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় গ্রামেরই এক চিকিৎসকও ডাকা হয়। পরে লাশের গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চলে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার কালীদাসপুর ইউনিয়নের রেল জগন্নাথপুরের ইছাহক আলীর ছেলে হাসানের সাথে হারদী গাংপাড়ার মানসিক প্রতিবন্ধী শর্মান আলীর মেয়ে শর্মিলা খাতুনের আনুমানিক ৮ মাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর সংসারে গিয়ে শর্মিলার ওপর নানা অজুহাতে নির্যাতন শুরু হয়। শর্মিলা তার নিকটজনদের জানিয়েছিলো, তার স্বামী হাসানের সাথে স্বামীর বড় ভাবি লিপি খাতুনের সাথে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানার পরই নির্যাতন শুরু হয়। মাঝে মাঝেই শর্মিলাকে মারধর করে বাড়ি থেকে চলে যেতো হাসান। কয়েকদিন আগেও সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। গত বুধবার বাড়ি ফেরে। ওই রাতেই শর্মিলার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।

শর্মিলার মামা জয়নাল মোবাইলফোনে মাথাভাঙ্গাকে বলেছেন, শর্মিলারা ৪ ভাই বোন। বেশ কিছুদিন আগে ওদের পিতা মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে শর্মিলাসহ তার ভাইবোনদের মামাবাড়ি বলরামপুরে নিয়ে রাখা হয়। সেখান থেকেই দেখাশোনা করে হাসানের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর হাসানের সাথে তার ভাবির অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি শর্মিলা দেখে মেনে নিতে না পারার কারণেই তাকে নির্মম হত্যার শিকার হতে হয়েছে। গতপরশু বুধবার রাতে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালানো হয়। পরে খবর দেয়া হয় পুলিশে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। বিকেলে তার নানাবাড়ি বলরামপুরে নিয়ে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিবেশীরা শর্মিলা হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছে।