স্বস্তির নেতৃত্ব পেতে অধীর অপেক্ষায় দেশবাসী

 

বিরোধীদল ছাড়া নির্বাচন যেমনটি হওয়ার দরকার তেমনটিই হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে ভোটারের তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা না গেলেও ভোট পোলের সংখ্যা কম নয়। কীভাবে ভরলো ব্যালট বাক্স? বোদ্ধা ভোটারদের কাছে বিষয়টি অস্পষ্ট নয়। তবে সকল আসনের সব কেন্দ্রের চিত্র এক নয়। যেমন মেহেরপুর-২ আসনের অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি আর যাই হোক হতাশাজনক ছিলো না। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সাথে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত নেতার লড়াই ছিলো জমকালো।

অবশ্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই বাধ্যবাধকতার আওতায় ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনী তফিশল ঘোষিত হয়। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী গতকাল নির্বাচন সম্পন্নও হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটভুক্ত দলগুলোর অধিকাংশই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, নির্বাচন জমিয়ে তোলার চেষ্টাও চলেছে। অপরপক্ষে বিরোধীদল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার আনেক আগে থেকেই নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে আসছিলো। উভয়পক্ষের সমঝোতার লক্ষ্যে সংলাপের গুরুত্বও তুলে ধরেন দেশের বুদ্ধিজীবীমহল। হয়নি। জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। ঘোষিত তফশিল বাতিলের দাবি জানিয়ে বিরোধীদল ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। প্রতিহতের চেষ্টাও করে। কোনো কিছুতেই কিছু হয়নি। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। হাতে গোনা কিছু আসনের কয়েকটি কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও উত্থাপন হয়েছে। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে আবারও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করবে। এখন একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অপেক্ষা।

সাধারণ ভোটার গোপন ব্যালটে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে যে রায় দেন, সেই রায়েই তথা ম্যান্ডেটে ক্ষমতার মসনদে অধিষ্ঠিত হয় বিজয়ী দল। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। এ নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে যে সরকার গঠিত হবে তাও প্রশ্নাতীত নয়। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার খেসারত দিচ্ছে মূলত আমজনতা। অস্থিরতা যতো দীর্ঘ হবে ততোই ক্ষতি। দেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দিকেই দেশবাসী তাকিয়ে। অনিশ্চয়তা কাটিয়ে স্বস্তির নেতৃত্ব পেতে অধীর অপেক্ষায় দেশবাসী।