স্ত্রীর ওপর অভিমান করে পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননা : উত্তেজনা

চুয়াডাঙ্গা গোপালনগরের জুড়োনকে ধরে পিটুনি : অবমাননাকারী অবশেষে পুলিশ হেফাজতে

 

স্টাফ রিপোর্টার: স্ত্রীর ওপর অভিমান করে ঘরে থাকা পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননা করায় চুয়াডাঙ্গা গোপালনগরের জুড়োনের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে সাধারণ জনতা। গতরাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে ধরে পিটুনির সময় পুলিশ পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। একই সাথে জুড়োনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।

গ্রামবাসী জানিয়েছে, তাহাজ উদ্দীনের ছেলে জুড়োন আলী (২৫) উড়নচণ্ডি প্রকৃতির। গাঁজা সেবন করে। সপ্তাহ দুই আগে স্ত্রী আছিয়ার আবদারে কোরআন শরিফ কেনার জন্য জুড়োন ২শ টাকা দেয়। বাকি টাকা জোগাড় করে আছিয়া পবিত্র কোরআন শরিফ কেনে। অপরদিকে আছিয়ার পিতার বাড়ি থেকে আনা কিছু টাকা দিয়ে কয়েক মাস আগে কেনা হয় একটি গরু। ওই গরু বিক্রি করতে চাইলে স্ত্রী আছিয়ার সাথে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। ক্ষিপ্ত হয়ে জুড়োন ঘরে তাকা পবিত্র কোরআন শরিফ বের করে প্রথমে আগুন ধরাতে যায়। আগুন না লাগলে ছিঁড়ে কলপাড়ের গর্তে ফেলে দেয়। বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে প্রতিবেশীরা জুড়োনকে খুঁজতে শুরু করে। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর মহল্লায় মেম্বার আলমগীর হোসেনের উপস্থিতিতে সালিস বসে। সালিসে জুড়োন আলীকে হাজির করতে না পারায় অভিযোগ ওঠে পার্শ্ববর্তী হোসেন শাহর দরবারের খাদেম মেহেরপুরের বজলু ও গোপালনগরের ফলু তাকে সরিয়ে দিয়েছে। সালিসে ওদের দুজনকে হাজির করা হলে তিন দিনের মধ্যে জুড়োনকে হাজির করার প্রতিশ্রুতি দিলে সালিস স্থগিত হয়। সালিস স্থগিত হলেও উত্তেজনার বারুদ ফুসতে থাকে। অনেকেই খুঁজতে থাকে জুড়োনকে। এরই এক পর্যায়ে রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে তাদের ঘরের ছাদ তল্লাশি করে স্থানীয়রা জুড়োনকে ধরে। দোকানে বসিয়ে রাখা হয়। পার্শ্ববর্তী গোপিনাথপুরের কিছু ব্যক্তি সেখানে পৌঁছুলে শুরু হয় পিটুনি। গ্রামের কিছু ব্যক্তি সেখান থেকে উদ্ধার করে একটি ঘরে আটকে রাখে। এ খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাত আনুমানিক ১‌১টার দিকে জুড়োনকে উদ্ধার করে সদর থানায় নেয়।

পুলিশ বলেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে জুড়োনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। কেউ মামলা করেনি। থানায় নেয়ার পর জুড়োন অবশ্য ভুল স্বীকার করে তওবা পড়তে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।