স্কুল কমিটি গঠনে মনোনয়নপত্র কেনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আ.লীগের দুপক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেআহত ৭

 

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদরের সড়াবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনে মনোনয়পত্র কেনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আ. লীগের দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে তিতুদহ ইউনিয়ন আ. লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আহম্মদ আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। উত্তেজনা প্রশমনে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সদর থানা ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে পকেট কমিটি গঠন করা হলে খাসপাড়া ও গোরগাড়া গ্রামের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না বলে জানিয়েছের। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ দিয়েছে পরস্পর বক্তব্য। আজ সকালে বিদ্যালয়ে বিরোধ নিরসনে বসতে পারে বৈঠক।

এলাকাবাসী জানায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের সড়াবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ৬ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গতকাল সোমবার ছিলো মনোনয়নপত্র কেনা এবং জমাদানের শেষ তারিখ। অভিযোগ উঠেছে বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি ও শিক্ষক প্রতিনিধি ফাতুরুজ্জামান এবং সেলিম পকেট কমিটি গঠন করে পুনরায় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য পাঁয়তারা শুরু করেন। এতে বাঁধ সাধে কমিটির অপর সদস্য খাসপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে তিতুদহ ইউনিয়ন আ. লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আহম্মদ আলী। তিনি আইন মোতাবেক অভিভাবকদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে গতকাল সকাল ৯টার দিকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য বিদ্যালয়ে যান। আহম্মদ আলী জানান, মনোনয়নপত্র কিনতে গেলে মনিরুজ্জামান মনি, শিক্ষক ফাতুরুজ্জামান ও সেলিম বাঁধা সৃষ্টি করেন। এতে উভয়ের মধ্যে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। এক পর্যায়ে উভয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। প্রতিপক্ষের হামলায় রক্তাক্ত জখম হয় খাসপাড়া গ্রামের আহম্মদ আলী, আলী হোসেনের ছেলে জসিম, ইদ্রীসের ছেলে জাহাঙ্গীর ও হাসেমের ছেলে মোস্তফা। অপর দিকে বিদ্যালয়ের সভাপতি তিতুদহ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনি বলেন, আহম্মদ আলী পরিকল্পিতভাবে তার লোকজন নিয়ে এসে বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে শিক্ষক ৯নং ওয়ার্ড আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাতুরুজ্জামান, ইব্রাহীম ও আফাজ নামের দুজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছেন। আহতদের মধ্যে আহম্মদ আলীকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এবং পরে যশোরে রেফার করা হয়। এ ঘটনায় সড়াবাড়িয়া এবং খাসপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে ছুটে যান চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান মুন্সী। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোন পক্ষই এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করতে আজ মঙ্গলবার উভয় পক্ষকে বলা হয়েছে। এদিকে খাসপাড়া ও গোবরগাড়া গ্রামের অভিভাবক সদস্যরা জানিয়েছেন, বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান না হলে এবং বিদ্যালয়ে পকেট কমিটি গঠনের পাঁয়তারা করা হলে আমারা আমাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাবো না। কারণ যে গ্রামে বিদ্যালয় অবস্থিত সে গ্রামের ছাত্রছাত্রী ৩০ থেকে ৩৫ জন। আর খাসপাড়া ও গোবরগাড়া গ্রামের ছাত্রছাত্রী প্রায় ১৭০ জন। ভোট হলে অভিভাবক সদস্য আমাদের এলাকায় হবার আশঙ্কায় বর্তমান কমিটির লোকজন পকেট কমিটি গঠন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গতকাল শেষ দিনে ৪ জন পুরুষ এবং ১ জন মহিলা অভিভাবক মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। ১৪ মে যাচাই-বাছাই, ১৭ মে প্রত্যাহার ও ৩১ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার ৩০৪ জন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল আমিন বিদ্যালয়ে এসে আইন মোতাবেক কাজ করার নির্দেশ দিয়ে গেছেন।