সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা আর থাকছে না : এসএসসিতে হরতাল-অবরোধের প্রভাব

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা হরতাল-অবরোধের কারণে এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকালে ফলাফলের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর তিনি এ মন্তব্য করেন। অপরদিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছন, পাবলিক স্কুলগুলোর অসৎ প্রতিযোগিতা ঠেকাতে আগামী বছর থেকে বোর্ড ভিত্তিক সেরা স্কুল নির্ধারণ করা হবে না। শনিবার মন্ত্রণালয়ে এসএসসির ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সৃষ্টির জন্য বোর্ড ভিত্তিক সেরা স্কুল নির্বাচন চালু হয়েছিল। কিন্তু তালিকায় ওপরের দিকে থাকতে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অসৎ পথ অবলম্বন করছে। তাই আগামীতে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সেরা ২০ বা ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনো তালিকা করা হবে না।

 

 

শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি ও নীলফামারীর জেলা প্রশাসক এবং কয়েকজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন।

 

ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিকূল অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ ফলাফল করেছে। হরতাল-অবরোধ না থাকলে ও পরীক্ষার সময় বারবার না বদলাতে হলে পাসের হার আরও বাড়ত। বিএনপির জ্বালাও, পোড়াও, হরতাল, অবরোধের কারণে বারবার পরীক্ষায় সময়সূচি বদলাতে হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হয়েছে।

 

রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে প্রতিকূল অবস্থায় পরীক্ষা দিয়েও পাসের হার এত বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিকূল অবস্থায়ও এত পাসের হার কম কথা নয়। একটু সুন্দর পরিবেশ পেলে শিক্ষার্থীরা অবশ্যই পরীক্ষায় পাস করবে।

 

গতবারের চেয়ে এবার শতকরা ৫.৬৩ ভাগ শিক্ষার্থী কম পাস করেছে। এ বছর শতকরা ৮৭.০৪ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। গতবার তা ছিল ৯২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ২০১৩ সালের ফলাফলও এর চেয়ে ভালো ছিল। সেবার ৮৯ দশমিক ৭২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। কমেছে জিপিএ-৫ও। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ২২ হাজার ৩১৩ জন শিক্ষার্থী। আর এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৯০১ জন।

 

মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি থেকে বিএনপি-জামায়াতকে বেড়িয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষের জীবন নিয়ে খেলবে তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের কোনো অধিকারই নেই। কেন মানুষ খুন করবে? কেন মানুষ পুড়িয়ে মারবে? কেন মানুষকে বোমা দিয়ে মারবে?

 

বিএনপি-জামায়াত মানুষ পুড়িয়ে মারা, মানুষের ক্ষতি করা, মানুষকে পঙ্গু করার কাজ থেকে বিরত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, প্রত্যেক জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য।  ছেলেমেয়েরা যাতে ঘরের কাছে উচ্চশিক্ষা নিতে পারে, সরকার সেই সুযোগ সৃষ্টি করতে চায়।

 

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিকূলতার মধ্যেও ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সময়মতো শিক্ষার্থীদের কাছে সরকার বই পৌঁছে দিয়েছে। এ সময় অনেকটা গেরিলা কায়দায় বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।