সুষমা স্বরাজের সফর : ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের চমৎকার সূচনাদেখছে ভারত

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকায়৪০ ঘণ্টার সফর শেষে দিল্লি ফিরেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।তার পুরো সফর নিয়েই তীক্ষ্ম দৃষ্টি রেখেছেন সবাই। সবার মধ্যে কৌতূহলজেগেছে, কী বার্তা নিয়েছেন বা দিয়েছেন ভারত সরকারের প্রভাবশালী এ মন্ত্রী।বিশেষ করে সরকার ও বিরোধীদলের বাইরে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদাজিয়ার সাথে কোন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে সুষমার তাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।বিশেষকরে সুষমা-খালেদা একান্তে ১০ মিনিট যে আলাপ করেছেন তা সবচেয়ে বেশি কৌতূহলসৃষ্টি করেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও১৯ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একান্তে যে আলাপ করেছেন তা কোনো পক্ষথেকেই গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি।

ধারণা করা হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়ারকাছে সংক্ষেপে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার কথাই জানতে চেয়েছেনসুষমা স্বরাজ। তার সফরকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনের প্রেসব্রিফিঙে ভারত তাদের মনোভাব জানানোর চেষ্টা করেছে।ঢাকা-দিল্লিপররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায় আনুষ্ঠানিক আলোচনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার ভারতেরপররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দিন প্রেসব্রিফিং করেন। এ সময়সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জাবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, এবার সম্পর্ক হবে‘(বাংলাদেশ-ভারত) কান্ট্রি টু কান্ট্রি’সম্পর্ক। দলের সাথে দলের কোনোসম্পর্ক হবে না।

তিনি আরো স্পষ্ট করে বলেছেন, তার দেশ ক্ষুদ্র দলীয়রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে দু দেশের সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে না। সম্পর্ক হবেজনগণ টু জনগণ। বাংলাদেশের জনগণ যে ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে ভারত সেধরনের সরকারের সাথেই কাজ করতে বেশি পছন্দ করে।কংগ্রেসের শাসন আমলেবাংলাদেশের সাথে দলীয় ভিত্তিতে সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলো। মোদির সরকার কীতা-ই করবে?এমন প্রশ্নে জবাবে স্পষ্ট করে জবাব দেন আকবর উদ্দিন। তিনি বলেন, ভারত কখনও দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয় না।

ভারতের বিদেশমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরো বলেন, সম্পর্কের বিষয়টি ফ্রেশ গ্রাউন্ডেদেখতে চায় তার সরকার। এটি অবশ্যই দলীয় পর্যায় নয়, এটি হবে অবশ্যই জনগণেরপর্যায়ে।বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমুখপাত্রের বক্তব্য স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে, কংগ্রেস যেভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায়বসানোর জন্য মরিয়া হয়ে কাজ করেছে তা থেকে সরে এসেছে নতুন সরকার। মোদীসরকারের কাছে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গত পাঁচ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের খবররয়েছে। আর সে কারণেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সফরকালে অনেকবিষয়ই স্পষ্ট হয়ে ওঠছে।

সুষমার এ সফর আওয়ামী লীগ তার সরকারের জন্যইতিবাচক বলে উল্লেখ করলেও বার্তা অনেকটা ভিন্ন বলে উল্লেখ করেন আন্তর্জাতিকসম্পর্ক বিশ্লেষকরা।তারা বলছেন, সুষমার এ সফরের স্পষ্ট হয়েছেভারতের নতুন সরকার বিশেষ কোনো দলের প্রতি অনুগ্রহ দেখাবে না। বাংলাদেশেরসাথে সম্পর্ক হবে ‘স্রেফ স্ট্রেট টু স্ট্রেট’। এক্ষেত্রে কোনো বিশেষ দল বাগোষ্ঠীর প্রতি দুর্বলতা দেখাবে না মোদী সরকার। বাংলাদেশের জনগণ যে ধরণেরসরকার চায় তার সাথেই ভালো সম্পর্ক রাখবে ভারত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কংগ্রেস সরকারের একান্ত ইচ্ছার কারণেই পশ্চিমাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনকরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষে একটি একতরফা নির্বাচন করা সম্ভবহয়েছিলো। কিন্তু ভারতের বর্তমান সরকার যদি বিশেষ কোনো দলকে ক্ষমতায় টিকিয়েরাখতে তৎপরতা না চালায় তাহলে বাংলাদেশে দ্রুতই একটি জনগণের সরকারপ্রতিষ্ঠার পথ সহজ হবে। আর ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপনা করুক সেটাই চায় বাংলাদেশের সাধারণ জনতা।