সারা দেশে একযোগে আগামী ৮ নভেম্বর সহকারী শিক্ষক পদে লিখিত পরীক্ষা

চুয়াডাঙ্গায় নিয়োগপ্রত্যাশী ৮ হাজার ২শ : সেই চক্র সক্রিয়

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সহকারী শিক্ষক পদে আগামী ৮ নভেম্বর শুক্রবার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় ১১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তবে, এবার নতুন একটি কেন্দ্র অন্তর্ভূক্ত হয়েছে এবং বিভিন্ন অভিযোগে বাদ পড়েছে দুটি কেন্দ্র। এবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন ৮ হাজার ২০০ পরীক্ষার্থী। তবে, কী সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে তা শিক্ষা কর্মকর্তারা সঠিকভাবে বলতে পারেননি।

এদিকে এ নিয়োগ পরীক্ষা সামনে রেখে সিন্ডিকেটের সদস্যরা আবারো মাঠে নেমেছেন। তারা চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা সংগ্রহ করেছেন। যারা চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিতে পারেননি, তাদের কাছ থেকে শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদপত্র জমা রাখা হচ্ছে। অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, এবারও সিন্ডিকেটের মূল হোতা হিসেবে হাঁপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের নাম জোরেশোরে প্রচার হচ্ছে। এছাড়া, আসমানখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামীম হোসেন, পিটিআইয়ের প্রশিক্ষক আরিফ হোসেনের নাম মানুষের মুখে মুখে। এ চক্রের সাথে চুয়াডাঙ্গার সরকারি কলেজ, দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর নামও আলোচনা উঠে এসেছে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা  পৌর কলেজ ও চুয়াডাঙ্গা একাডেমী কেন্দ্র বাতিলের ঘোষণার পর একটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দিন মোট তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। যার মধ্যে ওই সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকেই ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলার মধ্যদিয়ে ওইদিন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিলো।

এর আগে গত ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত লিখিত ও পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার পর চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সহকারী শিক্ষক পদে নির্বাচিত হয়েছেন ১২৪ জন। তবে, তারা এখনো নিয়োগপত্র না পাওয়া বিপাকে পড়েছেন। এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা।

চুয়াডাঙ্গার ১১টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হলো ৮ হাজার ২০০ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ১ হাজার ৪০০ জন, আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ১ হাজার ৫০ জন, ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার ৫০ জন, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯০০ জন, ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭০০ জন, আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০০ জন, টেকনিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে ৩৫০ জন, রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমী কেন্দ্রে ৫৫০ জন, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০০ জন, এম.এ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬০০ জন ও সীমান্ত উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬০২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।

আগামী ৮ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার ১১টি কেন্দ্রের মধ্যে নতুন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টি। আর বাদ পড়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ ও চুয়াডাঙ্গা একাডেমী।

গত ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সহকারী শিক্ষক পদে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৯ হাজার ৩৩৫ জন। এর মধ্যে নকলের অভিযোগে ৮ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হন এবং দুজন পরীক্ষার্থীকে সাতদিনের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়। ওই পরীক্ষায় নির্বাচিত হন ১২৪ জন। তবে নির্বাচিতরা এখনো পর্যন্ত কেউই নিয়োগপত্র পাননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন সরকার জানান, ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কী সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ করা হবে এ বিষয়ে এখনই সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। দুটি কেন্দ্র বাদ পড়ার বিষয়ে তিনি আরো জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ১২৪ জন নির্বাচিতদের কবে নিয়োগপত্র দেয়া হবে তারও সিদ্ধান্ত হয়নি। এবার পরিচয়পত্র ইন্টারনেটেই ডাউনলোড করতে হয়েছে।