সভাপতি পদের দু প্রার্থী লেমন ও গিয়াস আপিলে ফেরত পেলেন প্রার্থিতা

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নির্বাচন ॥ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ আজ

নির্ধারিত সময়ের পরে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন নিয়ে হাজির কয়েক প্রার্র্থী ॥ উত্তেজনা
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার নির্বাচনে সভাপতি পদ প্রার্থী হাজি আসাদুল হক লেমন ও গিয়াস উদ্দীন প্রার্থিতা ফেরত পাচ্ছেন। আপিল বোর্ড শুনানি শেষে সংগঠনের গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করে দুজনেরই প্রার্থিতা বহাল রাখার পক্ষে রায় দিয়েছেন। ফলে আজ বৃহস্পতিবার এ দুজনসহ পূর্বেই বহালকৃত অপর প্রার্থী হাজি সালাউদ্দীন চান্নুর নাম চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় প্রকাশ করা হবে। এ হিসেবে সমিতির সভাপতি পদে ৩ জনই থাকছেন ভোটযুদ্ধে।
এদিকে নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৭টার কিছুটা পরে সহসভাপতি পদপার্থী মফিজুর রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ প্রার্থী খন্দকার জান্নাতুল ফেরদাউস সৌরভ, প্রচার সম্পাদক শাহজাহান আলীসহ কয়েকজন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন নিয়ে হাজির হন। এ সময় উপস্থিত নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের সকলেই বলেন, যেহেতু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময় অতিক্রম করেছে বেশ কিছুক্ষণ আগে সেহেতু এ আবেদন এখন গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এ সময় চরম উত্তেজনা দানা বাধে। কেউ কেউ উচ্চস্বরে কথা বলে উত্তেজনার মাত্রা বাড়াতে থাকলেও নির্বাচন কমিশন পুনরায় ঘোষণা দিয়ে জানিয়ে দেয়, কোনো রকম নিয়মের ব্যতয় করা হবে না। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দুটি আবেদন পত্রিকা অফিসে দেয়া হলেও শাহজাহান আলী পুনরায় আবেদন করে প্রার্থিতা বহাল রাখছেন বলে জানিয়েছেন। সে হিসেবে দুটি প্যানেলই ভোটযুুদ্ধে বেশ শক্ত হয়েই নামছেন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে একজন ও সদস্য পদে একজনসহ ১৫টি পদে ৫৩টি আসনে দুটি প্যানেলই এখন ভোটযুদ্ধে। সমিতির ৯৮৪ জন ভোটার আগামী ৩ নভেম্বর আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে গোপন ব্যালটে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত করবেন যোগ্য নেতৃত্ব। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী আজ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের নির্ধারিত দিন। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় ছিলো প্রার্থিতা প্রত্যহারের নির্ধারিত সময়। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাজি অ্যাড. সেলিম উদ্দীন খানসহ উপস্থিত নির্বাচন কমিশনারদের তরফে ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হচ্ছে, কেউ কি আছেন যে তিনি বা তাদের কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন? এ ঘোষণায় সাড়া না মিললে জানানো হয় কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। এর বেশ কিছুক্ষণ পর ৪-৫ জন হাজির হন মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন নিয়ে। তখন নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়, নির্ধারিত সময় যেহেতু অতিক্রম করেছে বেশ কিছু সময় আগে সেহেতু ওটা গ্রহণের সযোগ নেই। তবে কেউ কেউ বলেন, যদি কে নো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াতে চান সেক্ষেত্রে তিনি গণসংযোগ মাধ্যম তথা পত্রিকার সহযোগিতা নিতে পারেন। পত্রিকায় বিবৃতিও দিতে পারেন।
গতরাতে দৈনিক মাথাভাঙ্গা দফতরে তিনটি প্রত্যাহার আবেদনপত্র পৌছুনো হয়। এগুলো হলো- সহসভাপতি পদ প্রার্থী মফিজুর রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী খন্দকার জান্নাতুল ফেরদাউস সৌরভ ও প্রচার সম্পাদক প্রার্থী শাহজাহান আলী। শাহজাহান আলী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করছেন বলে প্রথমে জানালেও পরে তিনি পৃথকভাবে লিখিতভাবে বলেছেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে ইচ্ছুক ছিলাম, সময়ক্ষেপণের কারণে নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেনি। সুতরাং আমার পদটি বহাল রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি আসাদুল হোসেন লেমন ও গিয়াস উদ্দীনের সমর্থক হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও এবারের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইবরুল হাসান ইবু দুজনেরই মনোনয়নে স্বাক্ষর দেন। এক ব্যক্তি যে পদে শুধুমাত্র একটি ভোটাধিকার প্রয়োগের এখতিয়ার রাখেন তিনি একই পদের দুজন প্রার্থীর সমর্থক হবেন কীভাবে? আসলেই তিনি কার সমর্থক? ফলে ইবরুল হাসান ইবুর সমর্থিত সভাপতি পদের দুজনেরই মনোনয়নপত্র তথা প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। বাতিলের সাথে সাথেই আপিল করেন দু প্রার্থী। শুনানি শেষে সংগঠনের গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করে আপিল বোর্ড দুজনের প্রার্থিতা বহাল রাখে। যেহেতু গঠনতন্ত্রে প্রার্থীর সমর্থক প্রসঙ্গে স্পষ্ট কোনো ব্যাখা নেই সেহেতু প্রার্থিতা বাতিল করা সমচীন নয়। এ যুক্তিতে দুজনের প্রার্থিতা বহাল করা হয়। আপিল বোর্ডের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হাজি অ্যাড. আশরাফ আলী। সদস্য রয়েছেন অ্যাড. নূরুল ইসলাম ও অ্যাড. এমএম শাজহান মুকুল।