সংলাপে অগ্রাধিকার ৭ ইস্যু নিয়ে  সংলাপ শুর কাল

 

স্টাফ রিপর্টার: নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনার মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কাল ৩১ জুলাই থেকে শুরুর পর অক্টোবর পর্যন্ত রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক ও নারী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করবে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। সংলাপে সাতটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বাংলা ভাষায় প্রণয়ন, ভোটে অবৈধ অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধে আইন সংস্কার, সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজ করা, প্রবাসী ভোটারদের ভোটদান নিশ্চিত করা, নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধত রাজনৈতিক দল নিরীক্ষা-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সবার সক্ষমতা বৃদ্ধি করার বিষয়ে প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হবে। তবে আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও নির্বাচনে ইভিএম বা ডিভিএম ব্যবহার নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভার যে কার্যপত্র ইসি সচিবালয় চূড়ান্ত করেছে, তাতে দেখা যায়, আমন্ত্রিত ৫৯ প্রতিনিধির জন্য ২ ঘণ্টা সময় রাখা হয়েছে। সেই হিসেবে ইসির আলোচ্যসূচির সাতটি বিষয়ে আমন্ত্রিতদের প্রত্যেকে দুই মিনিটের মতো সময় পাবেন। সূচিতে দেখা গেছে, সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে ১১টা : আমন্ত্রিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের এবং নির্বাচন কমিশনারের আসন গ্রহণ, ১১টা : প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে ইসি সচিবের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভা শুরু, ১১টা থেকে ১১টা ১৫ মিনিট : সিইসির স্বাগত ভাষণ, ১১টা ১৫ মিনিট থেকে ১৩টা ১৫ মিনিট : সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময়, ১৩টা ১৫ থেকে ১৩টা ২৫ মিনিট :  ইসি সচিবের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন, ১৩টা ২৫ থেকে ১৩টা ৩০ মিনিট : নির্বাচন কমিশনারের ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং ১৩টা ৩০ মিনিট থেকে ১৪টা : আলোচনার সমাপ্তি ও মধ্যাহ্ন ভোজ।

নাগরিক (সুশীল) সমাজের প্রতিনিধি নির্বাচনের বিষয়ে ইসি বলেছিল, এই সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, আইনজীবীসহ যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার স্বাগত ভাষণের জন্য সময় রাখা হয়েছে ১৫ মিনিট। সভা শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জন্যও তিনি নেবেন পাঁচ মিনিট সময়। ইসির নতুন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ রবিবার যোগ দিয়েই সংলাপগুলো সঞ্চালনা করবেন।

ইসি জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, প্রথম দিন কমিশনের সংলাপে অংশ নিতে ৫৯ জন নাগরিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা যায়, কর্মপরিকল্পনার সাতটি বিষয় ছাড়াও প্রাসঙ্গিক অন্য বিষয়েও মতামত শুনতে চায় ইসি। আলোচ্য বিষয় হলো বিদ্যমান ইংরেজি আইন কাঠামো, বিশেষ করে ‘দ্য রিপ্রেজেনটেশন অব দ্য পিপল অর্ডার, ১৯৭২’ এবং ‘দ্য ডিলিমিটেশন অব কনস্টিটিউয়েন্সিস অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬’ যুগোপযোগী করে বাংলা ভাষায় প্রণয়ন; বিগত নির্বাচনসমূহের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অবৈধ অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার রোধকল্পে আইনি কাঠামো সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাবনা; সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণকল্পে জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটারসংখ্যা, সংসদীয় এলাকার আয়তন, প্রশাসনিক অখণ্ডতা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ; নির্বাচন প্রক্রিয়া যুগোপযোগী ও সহজিকরণের বিষয়ে আইনি কাঠামো ও প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন; প্রবাসী ভোটারদের ভোটদান নিশ্চিত করার বিষয়ে একটি আইন কাঠামোসহ প্রক্রিয়া প্রণয়নের জন্য প্রস্তাবনা; কর্মপরিকল্পনায় বর্ণিত অন্যান্য কাঠামোকে যুগোপযোগী করার প্রস্তাবনা; নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য পরামর্শ; ভোটকেন্দ্র স্থাপন-সংক্রান্ত কার্যক্রম যুগোপযোগী করার জন্য পরামর্শ; নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিরীক্ষা-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা; সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মপরিকল্পনার অতিরিক্ত কোনো প্রস্তাবনা।