শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত : শীতবস্ত্র বিতরণ

স্টাফ রিপোর্টার: উপ-মহাদেশীয় উচ্চ চাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে । আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের সকল নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। চুয়াডাঙ্গা, ঈশ্বরদী, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সীতাকুন্ডু, শ্রীমঙ্গল, রংপুর ও সৈয়দপুর অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। গতকালও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা টাঙ্গাইলে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো টেকনাফে ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্র ছিলো ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ ২১ দশমিক শুণ্য ও সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা।

চুয়াডাঙ্গার শীতার্ত দুস্থ মানুষের জন্য শীতবস্ত্র চেয়ে জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন ঢাকায় ফ্যাক্সবার্তা পাঠিয়েছেন। গতকাল রোববার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো আবেদনে তিন হাজার পিস কম্বল এবং দু হাজার পিস করে চাদর ও শীতবস্ত্র চাওয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অবস্থিত হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপামাত্রা চুয়াডাঙ্গা প্রায় প্রতিদিনই ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি রেকর্ড করছে। শীতের এ তীব্রতা অব্যাহত থাকলে জেলার দরিদ্র, দুস্থ ও অসহায় জনগণের দুর্দশা আরো বৃদ্ধি পাবে। চলতি শীত মরসুমে বরাদ্দকৃত ৭ হাজার ৩৫৬টি শীতবস্ত্র কম্বল পাওয়া যায় তা ইতোমধ্যে জেলার চারটি উপজেলায় নির্বাহী অফিসারগণের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। জেলার দুস্থ, দরিদ্র ও শীতক্লিষ্ট জনগণকে সাহায্য প্রদানের জন্য বর্তমানে কোনো শীতবস্ত্র জেলা ত্রাণ গুদামে মজুদ নেই।

চুয়াডাঙ্গায় শীতজনিত কারণে চুয়াডাঙ্গা হিজলগাড়ির কৃষক জালাল উদ্দিন মারা গেছেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। শনিবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো। ওই দিন বিকেলে মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে কৃষক জালাল উদ্দিন আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে শীতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয় বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন।

আলমডাঙ্গা ব্যরো জানিয়েছে, গতকয়েক দিনে দেশের র্সবনিম্ন তাপমাত্রা রের্কড হয়েছে এ জেলায়। শীতের তীব্রতার সাথে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। সেই সাথে বেড়েছে শিশুদের শীতঘটিত রোগ। সূর্যের লুকোচুরি আর মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বভাবকি জীবনযাত্রা। বিশেষ করে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষেরা দুর্ভোগে পড়েছেন। জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করে বাইরে বের হতে হচ্ছে তাদের। এ শীতের হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে গতকাল রোববার উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলম শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করেন। উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি সানোয়ার হোসেন লাড্ডু, একটি বাড়ি, একটি খামারের সমন্বয়কারী অফিসার আনোয়ার হোসেন, শামীম এজাজ, সাংবাদিক হামিদুল ইসলাম আজম, শরিফুল ইসলাম রোকন, শাহাবুল ইসলাম প্রমুখ।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে এক চিলতে হাসির উদ্যোগে গতকাল রোববার মেহেরপুর শহরে অসহায় হত-দরিদ্র মহিলা ও শিশুদের মাঝে বিভিন্ন স্থানে কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সংগঠনের উদ্যোগে মেহেরপুরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠনটি ২০১১ সাল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। গতকাল রোববার শহরে অসহায় হতদরিদ্র মহিলা ও শিশুদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।

মেহেরপুর জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের উদ্যোগে গতকাল রোববার দুপুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ কার্যালয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. গোলাম রসুল, সহসভাপতি আশরাফুল হক, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রানা, প্রচার সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সদস্য আমিনুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব বিশ্বাস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বারিকুল ইসলাম লিজন প্রমুখ।