শিশু শিহাবকে হত্যার পর এবার কিশোর জিহাদকে হত্যার হুমকি

দিশা না পেয়ে মা বিলকিস ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে পিতার বাড়িতে : চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় জিডি
কুতুবপুর থেকে ফিরে কামরুজ্জামান বেল্টু: কুপ্রস্তাবে প্রবাসীর স্ত্রী সাড়া না দেয়ায় শিশুসন্তান শিহাবকে অপহরণের পর হত্যার হুমকির কয়েকদিনের মাথায় তা সত্যে রূপান্তর হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলায় দুজন আসামি ধরাও পড়ে। বাকি আসামিরা মামলা তুলে নিতে বলেছে। অন্যথায় প্রবাসীর বড় ছেলেকে অভিন্ন কায়দায় হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে। এ হুমকির পর প্রবাসীর স্ত্রী ঘর-সংসার ফেলে পিতার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। পিতার বাড়ি আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি জিডিও করেছেন গত সোমবার।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের কুতুবপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের তোয়াজ্জউদ্দীন লাল্টু দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী। তার দু ছেলে জিহাদ ও শিহাবকে নিয়ে স্বামীর সংসারেই ছিলেন স্ত্রী বিলকিস খাতুন। কিছুদিন আগে গ্রামেরই মৃত ফকির মণ্ডলের ছেলে সুলতানসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা প্রবাসীর স্ত্রী বিলকিসকে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে ছোট ছেলে শিহাবকে অপহরণের পর হত্যারও হুমকি দেয়। এ হুমকির কিছুদিনের মাথায় গত ২৮ অক্টোবর বিকেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শিশু শিহাব নিখোঁজ হয়। শিহাবের মা বিলকিস খাতুন বলেছেন, ছেলে শিহাবকে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে অপহরকচক্র সুলতান গ্যাং মুক্তিপণ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকাও দাবি করে। একদিন পরই গ্রামের অদূরবর্তী শিবনগরে গলাকাটা মাঠ থেকে শিশু শিহাবের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে অপহরকচক্র হত্যা করে লাশ মাঠের একটি ধানক্ষেতে গুম করে।
বিলকিস খাতুন বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার দু আসামি একই গ্রামের মৃত ফকির মণ্ডলের ছেলে সুলতান ও মৃত শমসের আলীর ছেলে আব্দুল আলিমকে গ্রেফতার করে। মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেয়া হয়। গ্রেফতারকৃত দু আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ইব্রাহিম। মামলাটি তদন্তাধীন। এরই মাঝে মামলার আসামিদের লোকজন সম্প্রতি বাদীর বাড়িতে গিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলে, মামলা তুলে নিতে। মামলা তুলে না নিলে বড় ছেলে ৮ম শ্রেণির ছাত্র শিহাবকেও তুলে নিয়ে হত্যা করা হবে বলে জানিয়ে দেয়। এ হুমকির পরদিনই বিলকিস বাড়ি ছেড়ে তার পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি জিডিও করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, তদন্ত চলছে। মামলার এজাহার নামীয় দু আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।