শিগগিরই চুয়াডাঙ্গা সদর নবগঠিত গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনের তফশিল : তিতুদহে রয়েছে আইনি জটিলতা

বেগমপুর প্রতিনিধি: চলতি মাসেই চুয়াডাঙ্গা সদর নবগঠিত গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হতে যাচ্ছে। এমন সংবাদে ইউনিয়ন জুড়ে প্রার্থী এবং ভোটাররা কৌতূহলী হয়ে উঠেছে। সর্বত্রই আলোচনা কোন দল থেকে কে কে হচ্ছেন প্রার্থী। তবে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আইনি জটিলতা থাকায় পুনর্গঠিত তিতুদহ ইউপি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা নিয়ে রয়েছে জটিলতা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভৌগলিক ও জনসংখ্যার দিক বিবেচনা করে চুয়াডাঙ্গা সদরের শঙ্করচন্দ্র, বেগমপুর ও তিতুদহ এ ৩টি ইউনিয়ন বিভক্ত করে মাখালডাঙ্গা, নেহালপুর ও গড়াইটুপি নামে আরও ৩টি নতুন ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়েছে। পুনর্গঠিত এবং নবগঠিত ইউনিয়ন নিয়ে গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেট প্রকাশের প্রায় আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও নির্বাচন তফশিল ঘোষণা করা নিয়ে আইনি জটিলতায় পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে। সকল জল্পনা-কল্পানার অবশান ঘটিয়ে অবশেষে চলতি মাসেই নবগঠিত গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হতে যাচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণায় আইনি কোনো জটিলতা না থাকলেও তিতুদহ ইউপি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা নিয়ে রয়েছে সীমানা নির্ধারণীর আইনি জটিলতা। তবে তা দ্রুত সমাধান করা গেলে একই সাথে গড়াইটুপি এবং তিতুদহের তফশিল ঘোষণা করা সম্ভব হবে বলে জেলা নির্বাচন কমিশন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহযোগিতায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রেরিতপত্র প্রাপ্তির পর স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লি¬ উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের গত ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরের ৬৮৬নং পত্রের নির্দেশক্রমে এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) সংশোধন আইন ২০০৯ এর ১১ ধারা মোতাবেক জেলা প্রশাসকের ওপর অর্পিত ক্ষমতা বলে সংশ্লি¬ষ্ট জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন ২৪ জুন ২০১৫ শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নকে বিভক্ত করে মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন, বেগমপুর ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নেহালপুর ইউনিয়ন ও তিতুদহ ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন নামে ৩টি নতুন ইউনিয়ন এবং শঙ্করচন্দ্র, বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নকে পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লি¬ষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুলিপি প্রেরণ করেন। তারই আলোকে ওই বছর ২৪ সেপ্টম্বর গেজেট প্রকাশিত হয়। নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের যে সমস্ত গ্রাম নিয়ে ওয়ার্ড গঠিত হয় তা হলো কালুপোল গ্রাম নিয়ে ১নং ওয়ার্ড, গোস্টবিহার ও খেঁজুরতলা গ্রাম নিয়ে ২নং ওয়াডর্, খাড়াগোদা ও জামালপুর গ্রাম নিয়ে ৩নং ওয়ার্ড, গড়াইটুপি ও বিত্তীরদাড়ি গ্রাম নিয়ে ৪নং ওয়ার্ড, তেঘরি ও কলাগাছি গ্রাম নিয়ে ৫নং ওয়ার্ড, গহেরপুর গ্রাম নিয়ে ৬নং ওয়ার্ড, বাটিকাডাঙ্গা ও সুজায়েতপুর গ্রাম নিয়ে ৭নং ওয়ার্ড, সড়াবাড়িয়া ও খাসপাড়া গ্রাম নিয়ে ৮নং ওয়ার্ড এবং গবরগাড়া ও ছিলন্দিপাড়া গ্রাম নিয়ে ৯নং ওয়ার্ড গঠিত হয়। প্রায় আড়াই বছর ধরে ইউনিয়ন ভাগাভাগি হলেও আইনি জটিলতার কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। শেষমেষ চলতি মাসেই নবগঠিত গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হতে যাচ্ছে। ফলে ওই ইউনিয়নের প্রার্থী এবং ভোটাররা বেশ কৌতূহলী হয়ে উঠেছে। সর্বত্রই আলোচনা চলছে কোন দল থেকে কে কে প্রার্থী হচ্ছে। যদিও গত বছরের প্রথম দিকে নির্বাচনের বাতাস শুরু হওয়ায় অনেকেই সভা সমাবেশ, দোয়া প্রার্থানা, প্রচার-প্রচারণা করে মাঠ গরম করে রেখেছিলো। আইনি জটিলতার কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়ায় প্রার্থীরা ঝিমিয়ে পড়ে। আবারও গড়াইটুপি ইউনিয়নে নির্বাচন হতে যাচ্ছে এমন সংবাদে অনেক প্রার্থী গা ঝাড়া দিতে শুরু করেছেন। তবে দেরিতে হলেও যেন আসছে তফশিলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এমনটাই প্রত্যাশা গড়াইটুপি ইউনিয়নবাসীর। এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার কয়েকটি জায়গায় এবং সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউপির নির্বাচন তফশিল ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।