লেবেলক্রসিঙে গেট না নামানো অবস্থায় ট্রেন দেখে পথচারিদের চিৎকার

চুয়াডাঙ্গা প্রধান সড়কের একাধিক দূরপাল্লার যাত্রীভর্তি কোচ অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে পেলো রক্ষা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা লেবেলক্রসিঙে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে দুটি দূরপাল্লার যাত্রীভর্তি কোচসহ বেশক’টা যানবহন। গতরাত ৯টা ২৪ মিনিটে ঊর্ধ্বমুখি একটি মালবাহী ট্রেন চুয়াডাঙ্গা স্টেশন অতিক্রম করে লেবেলক্রসিঙের নিকট পৌঁছুলেও গেট নামানো হয়নি দেখে কয়েকজন বাইসাইকেল আরোহীসহ পথচারী চিৎকার শুরু করেন। এতেই রক্ষা পায় দুটি কোচসহ বেশক’টা যানবহন। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টারের অভিমত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, দিন পনেরো ধরে অনুমান নির্ভর হয়েই চুয়াডাঙ্গার প্রধান লেবেলক্রসিঙের গেট নামানো হচ্ছে বলেই এ ধরনের বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের ঊর্ধ্বমুখে অদূরেই রয়েছে লেবেলক্রসিং। জেলা শহরের প্রধান ও ব্যস্ততম সড়কের লেবেলক্রসিঙে কখনো দীর্ঘসময় গেট নামিয়ে রাখার কারণে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়, বাড়ে দুর্ভোগ। কখনো গেট না নামানোর কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়। গতরাত যখন ৯টা ২৪ মিনিট, তখন চুয়াডাঙ্গা স্টেশন অতিক্রম করে লেবেলক্রসিঙের নিকট পৌঁছুলেও গেট না নামানোর কারণে দু দিকে থাকা দুটি দূরপাল্লার কোচ নির্ঘাত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে দেখে পথচারী ও বাইসাইকেল আরোহীরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন। এতেই দু দিকের বাস-ট্রাকের চালকেরা থমকে থেমে যান। তখন কোথা থেকে যেন হাজির হন গেটম্যানও। তড়িঘড়ি করে গেট নামান। দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে পড়েন উপস্থিত প্রায় সকলে। এ বিষয়ে গেটম্যান সাইদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেবিন থেকে আমাকে ট্রেন বা মালগাড়ি আসার কোনো খবর জানানো হয়নি। সে কারণে গেটও দেয়া হয়নি। কেবিনে কর্মরত আবুল কালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী স্টেশন মাস্টার আমাকে ফোনে বিষয়টি জানালে আমি গেটম্যানকে জানান। যেহেতু স্টেশন মাস্টারের তরফে তেমন কোনো তথ্য দেয়া হয়নি তাই গেটম্যানকেও জানানো হয়নি। স্টেশন মাস্টার হিসেবে গতরাতে ওই সময় কর্মরত ছিলেন আব্দুল খালেক। তিনি বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে লেবেলক্রসিঙের গেট ও সিগন্যাল ওঠা নামানো করানোর বার্তা দেয়া হতো এনালগ পদ্ধতিতে। এ পদ্ধতিতে বাতিল করে এখন ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র স্থাপনে কাজ চলছে। সে কারণে শুধু আজই নয়, গত ১৪ দিন ধরে স্টেশনে ট্রেন এলেও আমরা আগাম সিগন্যাল দিতে পারছি না। একইভাবে লেবেলক্রসিঙের গেট নামানোর সঙ্কেতও দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। রাতে ট্রেনের আলো দেখে আর দিনে ট্্েরনের ইঞ্জিন দেখেই মূলত লেবেলক্রসিঙের গেট নামানো হচ্ছে। এ অবস্থা আরও ১৫ দিনে থাকতে পারে। ফলে আমাদের সকলকেই এ ক’দিন একটু সতর্কতার সাথেই চলাচল করতে হবে।

স্টেশন মাস্টার এসব তথ্য দিলেও রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের অভিমত ভিন্ন। তারা বলেছেন, কোনো ট্রেন সিগন্যাল না পেলে স্টেশনে যেমন প্রবেশ করতে পারে না, তেমনই স্টেশন ত্যাগ করতে হলেও তার ছাড়পত্র লাগে। গতরাতে দর্শনা থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটি নিয়ম মেনেই চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে প্রবেশ করে, স্টেশন থেকে ছাড়পত্রের সঙ্কেত পেয়েই স্টেশন থেকে আলমডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়। অথচ কেবিনে মালবাহী ট্রেনের জন্য কোনো বার্তা দেয়া হয়নি। কেবিন থেকে গেটম্যানকেও জানানো হয়নি। বড় ধরনের দুর্ঘটনা অল্পের জন্য রক্ষা পেলেও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।