লটারিতে পুরস্কার পাওয়ার কথা বলে চুয়াডাঙ্গায় মোবাইলফোনে প্রতারণা

 

দু লাখ টাকার লোভে ২৪ হাজার টাকা খোয়ালো এক কলেজছাত্র

কামরুজ্জামান বেল্টু/শরিফ শান্ত: কলেজছাত্র দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামের উজ্জ্বল মোবাইলে প্রতারণার শিকার হয়েছে। কয়েক লাখ টাকার লোভে ২৪ হাজার ৫০ টাকার বিকাশ করে বেকায়দায় পড়েছে। শূন্য পকেটে বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে বিকাশ করতে গিয়ে বিকাশ এজেন্টের হাতে আটক হয় সে। ৫ ঘণ্টা আটক থাকার পর অবশেষে তার পরিবারের লোকজন বিকাশ করা টাকা গচ্চা দিয়ে তাকে মুক্ত করে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলাধীন জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের কাছারিপাড়ার নূর ইসলামের ছেলে উজ্জ্বল হোসেন (১৬) চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্র। সে চুয়াডাঙ্গা গুলশানপাড়ার একটি ছাত্রমেসে থেকে লেখাপড়া করে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে তার মোবাইলফোনে ০১৭৮২৬২০৩১৪ নম্বর থেকে একটি কল আসে। রিসিভ করলে অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয় ‘গ্রামীণফোন ও বাংলা লিংক মোবাইলফোন কোম্পানি যৌথভাবে ঢাকায় একটি মেলার আয়োজন করেছে। ওই মেলায় লটারির মাধ্যমে ১০ জন মোবাইল ব্যবহারকারী ভাগ্যবান নির্বাচিত হয়েছেন। তার মধ্যে আপনি একজন ভাগ্যবান। এ জন্য আপনি গ্রামীণফোন কোম্পানির পক্ষ থেকে দু লাখ ২০ হাজার ছয়শ’ টাকা পেয়েছেন। টাকা পেতে হলে এখনই বিকাশের এজেন্ট থেকে দেড় হাজার টাকা বিকাশ করুন। টাকা বিকাশ করলে আপনাকে একটা গোপন কোড নম্বর দেয়া হবে। নম্বরটি সোনালী ব্যাংকে দেখালেই আপনি ক্যাশ পেয়ে যাবেন।’ এ কথা শোনার পর উজ্জ্বল প্রায় আড়াই লাখ টাকা পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সে সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গেটের পার্শ্ববর্তী হান্নান স্টোরে আসে। সেখান থেকে প্রতারকদের দেয়া ০১৭৭৭৯১১১৩০ নম্বরে দেড় হাজার টাকা বিকাশ করে দেয়। এরপর প্রতারকদের সাথে উজ্জ্বল যোগাযোগ করে টাকা পাওয়ার জন্য গোপন কোড নম্বর চায়। এ সময় অপর প্রান্ত থেকে প্রতারকদের একজন জানায়, ‘আপনার বিকাশ করার কারণে কোম্পানি আপনার ওপর খুবই খুশি হয়েছে। এ জন্য আরো বাড়তি ৩০ হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। এ জন্য এখনই ২২ হাজার টাকা বিকাশ করলে সাথে সাথে ফিরতি বিকাশের মাধ্যমে আপনাকে ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হবে।’ কাছে টাকা না থাকায় উজ্জ্বল চিন্তায় পড়ে যায়। এরপর সে বুদ্ধি বের করে। সে মনে করে এখান থেকে ২২ হাজার টাকা বিকাশ করলেই যখন ৩০ হাজার টাকা ফিরতি বিকাশে পেয়ে যাবো তাই বিকাশ এজেন্টকে বুঝতে না দিয়ে খালি পকেটেই ২২ হাজার টাকার বিকাশ করে সে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই উজ্জ্বলের চৈতন্য ফেরে। সে বুঝতে পারে সে প্রতারিত হয়েছে। এরপর বিকাশ এজেন্ট টাকা চাইলে উজ্জ্বলের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। টাকা না দিতে পারায় বিকাশ এজেন্ট উজ্জ্বলকে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে আটক করে বাড়িতে খব পাঠায়। অবশেষে ৫ ঘণ্টা আটক থাকার পর উজ্জ্বলের পরিবারের লোকজন বিকাশ এজেন্টের টাকা পরিশোধ করে তাকে মুক্ত করে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল দিনভর হাসপাতালপাড়ায় আলোচনা চলে।