রেক্টিফাইড পানে ঝরছে জীবন : হচ্ছে অন্ধ

দর্শনা অফিস: দর্শনা কেরুজ চিনি কলের পরিবহনচালক শামসুল ইসলাম মারা গেছেন। তিনি দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুরের বাসিন্দা। তার মৃত্যুর আড়ালে রেক্টিফাইড স্প্রিট রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানালেও পরিবারের সদস্যরা অবশ্য তা স্বীকার করেনি।

জানা গেছে, দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ডিস্টেলারি বিভাগে একাধিক পদের মদ উৎপাদন করা হয়। মদ বিক্রির বৈধ দোকান রয়েছে। মদ বহন করা ট্রাক চালকদের কেউ কেউ মদ পান। তা স্থানীয়দের মধ্যেই বিক্রি করা হয়। এরপরও রেক্টিফাইড স্প্রিট হোমিও প্যার্থ ডাক্তারের দোকান থেকে তা বিক্রি করা  হয়। তা পান করে অনেকেই হারাচ্ছেন দৃষ্টি শক্তি। কেউ কেউ মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার কেরুজ পরিবহন বিভাগের পরিবহনচালক শামমুল মারা গেলে রেক্টিফাইড স্প্রিটের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। কেরুজ বাংলা ও ফরেন লিকার নিয়েও সরব আলোচনা চলতে থাকে প্রায় সর্বস্তরে।

স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, দর্শনা কেরুজ আমতলা, সুইপার কলোনী, মাইক্রোবাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বটতলা, দক্ষিণচাঁদপুর লাইনপাড়া, কেরুজ প্রাইমারি স্কুলপাড়া, সিজেনাল ব্র্যাক চত্বর, আনন্দবাজার, ফুলতলা, আনোয়ারপুর, মোহাম্মদপুর, বাসস্ট্যান্ড, দর্শনা রেলবাজার, দামুড়হুদার কুড়ুলগাছি, কার্পাসডাঙ্গাসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে অবৈধভাবে আসল ও নকল মদ বিক্রি করা হয়। দর্শনায় একটি বৈধ দোকানও রয়েছে। দোকানে কতোজন লাইসেন্সধারী ক্রেতা আর কতোজন বিনালাইসেন্সে তা কেনার সুযোগ পায় তার হিসেবে খাতা কলমের সাথে বাস্তবের বিস্তর ফারাক থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে অনিয়ম। এসব অনিয়মের পাশাপাশি দর্শনার কয়েকটি চিহ্নিত হোমিওপ্যাথি দোকান রয়েছে, সেখান থেকে দেদারছে রেক্টিফাইড স্প্রিট বিক্রি করা হয়। নেশার জন্য এ স্প্রিট পান করে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, কয়েকজন হোমিও প্যাথিক চিকিৎসক নেটমোড়সহ বিভিন্ন ধরনের এলকহল জাতীয় ওষুধ বিক্রি করছে মদ বিক্রেতাদের কাছে। যাতে রয়েছে অধিক পরিমাণে এলকহল। বেশি লাভের আশায় গুঁটি কয়েকজন হোমিও চিকিৎসক সাধারণ রোগিদের চিকিৎসা ছেড়ে দিয়ে মেতে উঠেছে সর্বনাশা এ কর্মকাণ্ডে। নেশার জন্য ক্ষতিকর রাসয়নিকদ্রব্য পানে মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে মারা গেছে ৩ জন। অন্ধ হয়েছে ৩ জন। এ ছাড়া অনেকেই হয়েছে বিকালঙ্গ, হারিয়েছে স্মৃতিশক্তি, গুনছে মৃতুর প্রহর। এরই মাঝে গতকাল বৃহস্পতিবার মারা গেছেন কেরুজ পরিবহন বিভাগের চালক দর্শনা পৌর শহরের দক্ষিণচাঁদপুরের শামসুল ইসলাম। তিনি মদপানে মারা গেছেন বলে বলাবলি হলেও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ব্রেন স্ট্রোকে মারা গেছেন।

এদিকে হরিজন সম্প্রদায়ের সুনিল ওরফে পচা মাস খানেক আগে মারা যান। এ নিয়ে স্থানীয় এক মদ বিক্রেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও এক পর্যায়ে তা ম্যানেজ করে ফেলা হয়। দর্শনা দক্ষিণচাঁদপুর টাউয়ারপাড়ার সুলতান অন্ধত্ব বরণ করেছেন। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যেই মোহাম্মদপুরের ভেজাল মদ বিক্রেতা আনোয়ার, জসিম, আশোক, বাবলু, সুইপার পট্রির বাটুয়াসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টির দিকে প্রশাসনের আশুদৃষ্টি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।darsana pic (2)

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *