রাজশাহী অঞ্চলে নিপাহ ভাইরাসে ৪ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: শীত মরসুমে উত্তরাঞ্চলে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত আরো ৫ জনকে পর্যবেক্ষণের তালিকায় রাখা হয়েছে।
মৃতদের তালিকায় রয়েছেন, রাজশাহীর বাঘায় সাইদুর রহমান (৪৫), পাবনার ঈশ্বরদীর ভাবানী গ্রামের ৫ বছরের শিশু মজনুর রহমান, নওগাঁর তেঁতুলিয়া এলাকার মজিবুর রহমান (২৫) ও নাটোরের বাগাতিপাড়া এলাকার সানুজ্জামান (২০)। এদের মধ্যে হাসানুজ্জামান রাজশাহী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আসম বরকতুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আক্রান্তদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রামেক হাসপাতালের ৩৬ নম্বর ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তাদের চিকিৎসার কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে, রামেক হাসপাতালসূত্র জানায়, ১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালে ভর্তি হন বাঘার সাইদুর রহমান। সকালে ভর্তির পর বিকেলে তিনি মারা যান। প্রথমে তাকে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা সাইদুর রহমানের লক্ষণ দেখে ধারণা করেন তিনি নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন সাইদুর রহমান নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। এর পরের দিন রামেক হাসপাতালে ভর্তি হন ঈশ্বরদী ভবানীপুর এলাকার ইয়ার আলীর ৫ বছরের ছেলে মজনুর রহমান। তাকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তির পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার শরীরে নিপাহ ভাইরাসের আলামত পাওয়া যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতে শিশু মজনু মারা যায়। মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা শিশু মজনুর কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠান। ঢাকা থেকে পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন ওই শিশু নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলো। নওগাঁর তেতুঁলিয়া এলাকার মজিবুর রহমান একই দিনে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। নিপাহ ভাইরাসে চারজনের মৃত্যুর পর এনিয়ে নড়েচড়ে ওঠেন চিকিৎসকরা।

নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সানুজ্জামানের স্বজনরা জানান, ৩১ ডিসেম্বর রাতে বন্ধুদের সাথে হাসানুজ্জামান খেজুরের রস পান করেন। কিন্তু ভোরে হাসানুজ্জামান অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার মুখ দিয়ে লালা, শরীর ও মাথাব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। পরে তাকে সকাল ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাত্র ১ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনি মারা যান।