রাঙ্গুনিয়ায় ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা : বিএনপির ৬ নেতা আহত

 

গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলার দুর্বিনীত উদ্যোগ : খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার: রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার পথে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। হামলায় মির্জা ফখরুলসহ দলটির কয়েকজন নেতা আহত হয়েছেন। হামলার পর তারা রাঙামাটি না গিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে যান। হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদরের ইছাখালী এলাকায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে এই হামলা হয় বলে জানান মির্জা ফখরুল। মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রমুখ ছিলেন। তারাও আহত হয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক অতর্কিতে তার গাড়িবহরে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমার গাড়ির কাচ ভেঙে গেছে। বহরের অন্য গাড়িও তছনছ করা হয়েছে। গাড়ির ভাঙা কাচ আমার শরীরে লেগেছে। আমাদের কয়েকজন নেতা আহত হয়েছেন। আমির খসরু বলেন, মির্জা ফখরুল হাতে আঘাত পেয়েছেন। রুহুল আমিন ঘাড়ে ব্যথা পেয়েছেন। মাহবুবুরের আঘাত মাথায়। তার (আমির খসরু) হাত দিয়েও রক্ত বেরিয়েছে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. মহসিন বলেন, মির্জা ফখরুলের বহরে ৫টির মতো গাড়ি ছিলো। ৪টিই ভাংচুর করা হয়েছে। হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ-যুবলীগ এই হামলা চালিয়েছে।

আমির খসরু অভিযোগ করে বলেন, এলাকাটি আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদের। তার লোকজনই এই হামলা করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। বিএনপি নেতাদের গাড়িবহর দুজন পথচারীকে ধাক্কা দেয়। এরপর সেখানে উত্তেজিত লোকজন কিছু একটা করেছে। হাছান মাহমুদ বলেন, পাহাড়ধস হলো, এক সপ্তাহ আগে। আর বিএনপি নেতারা এখন সেখানে যাচ্ছিলেন। তাও আবার হামলার অজুহাত তুলে রাঙামাটি না গিয়ে ফিরে এসেছেন। এটা রহস্যজনক। বিষয়টিকে নাটক মনে হচ্ছে।

গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলার উদ্যোগ: খালেদা জিয়া এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর হামলা গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলার উদ্যোগ উল্লেখ করে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন। গতকাল রোববার বিকেলে এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় বিএনপি মহাসচিবসহ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের গাড়িবহরে হামলা ও শারীরিকভাবে আক্রমণ করে আহত করার যে নজির সৃষ্টি করা হলো তা গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলতে সরকারের একটি দুর্বিনীত উদ্যোগ। এই ঘটনা বর্তমান বিনা ভোটের সরকারের আরেকটি হিংসাশ্রয়ী অসুস্থ রাজনীতিরই বহিঃপ্রকাশ। আওয়ামী লীগ গুণ্ডামীকেই আশ্রয় করেছে টিকে থাকার অবলম্বন হিসেবে। তাই শান্তি, স্বস্তি ও জননিরাপত্তাকে বিসর্জন দিয়ে নৈরাজ্যকেই বেছে নিয়েছে। এভাবে ভয়ভীতি, শঙ্কা ও আতঙ্কের পরিবেশ বজায় রেখে গণপ্রতিবাদকে চাপা দিয়ে রাখাটাই হচ্ছে তাদের মূল লক্ষ্য। সরকার ভক্ষকের ভূমিকা গ্রহণ করার জন্যই বাংলাদেশে মানুষের জীবন-জীবিকা এখন ভয়ংকর নিরাপত্তাহীনতায় বিপন্ন। জনসমর্থনহীন ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতেই অপরাধ ও অপরাধীদের সহযোগী হিসেবে বেছে নিয়েছে এই সরকার। তাই জনসমাজে সন্ত্রাসীদের শাসনই সর্বত্র বিরাজমান।

খালেদা জিয়া বলেন, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, মৌলভীবাজারে পাহাড়ধসে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুতে ওই এলাকাগুলোর বিপন্ন মানুষগুলো এখন শোকে-দুঃখে ম্রিয়মান। হাজার হাজার আহত মানুষের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। উপদ্রুত মানুষ বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতা না থাকায় অভুক্ত ও অসুস্থতায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিদ্যুত ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ওই এলাকাগুলোয় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। উপদ্রুত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে সরকার প্রধান বিদেশ সফরেই সময় কাটিয়েছেন। দুর্গত এলাকার অসহায় বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিয়ে ভ্রূক্ষেপহীন থেকেছেন সরকারপ্রধান। বাংলাদেশের জনগণকেই আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় দুশমন মনে করে। সে জন্য বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্ভোগে নিপতিত মানুষের পাশে আওয়ামী সরকার কোনো সময়ই দাঁড়ায়নি। এরা জনগণের বিপদে ও কষ্টে আনন্দ লাভ করে। তাই বৃহত্তর চট্টগ্রামে যেসব এলাকায় পাহাড়ধসে মানববিধ্বংসী মহাবিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে সে সব এলাকায় দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল-বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতার সমন্বয়ে গঠিত টিমকে ঢুকতে না দিয়ে নেতাদের গাড়িবহরে হামলা, উপদ্রুত এলাকায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের ব্যর্থতা ঢাকারই কৌশল। পাহাড়ধসে উপদ্রুত এলাকায় সরকারের তাচ্ছিল্যপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় দেশব্যাপী ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে যে ধিক্কার উঠেছে সেখান থেকে জনগণের চোখ অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার জন্যই বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। আওয়ামী পান্ডাদের দিয়ে বিএনপির গাড়িবহরে আক্রমণ সরকারের পতনের আগে শেষ মরণকামড়। তবে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর সব অপকর্মের হিসাব নিতে জনগণ অপেক্ষা করছে। আর এই অপেক্ষা বেশি দীর্ঘ হবে না। বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে নেতাদের আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্র্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। টুইটে খালেদা জিয়া
এর আগে সোমবার বিকালে টুইটে খালেদা জিয়া গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, বিএনপি মহাসচিবের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার নিন্দা জানাবার ভাষা নেই। এ হামলা গণতন্ত্র, রাজনীতি, নাগরিক অধিকার ও পরমতসহিষ্ণুতার ওপর হামলা। এর পরিণাম শুভ হবে না।।

এ আঘাত গণতন্ত্রের ওপর: পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটি যাওয়ার পথে বিএনপি নেতাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইছাখালী এলাকায় ওই হামলার পর রাঙামাটি যেতে না পেরে চট্টগ্রামে ফিরে আসে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলটি। দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে পৌঁছে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, এ আঘাত গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। যারা মুক্ত চিন্তার কথা বলে, এ সরকারের খারাপ কাজগুলোর বিরোধিতা করে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার তাদের প্রতি এ আঘাত। যারা জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন- এ আঘাত তাদের প্রতি।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্র আবার উদঘাটিত হয়েছে। সবসময় মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে এলেও তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ভিন্নমতেও তারা বিশ্বাস করে না। সহনশীলতা বলতে তাদের মধ্যে কিছু নেই। আমরা তো সেখানে কোনো জনসভা করতে যাইনি। আমাদের পার্টির মিটিংও করতে যাইনি। যারা নিহত হয়েছেন সেসব পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে যাচ্ছিলাম।

এই হামলা ‘অবিশ্বাস্য’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের অবস্থা যদি এই হয়, সাধারণ মানুষের অবস্থা কী? আমি মনে করি, এ আক্রমণ গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ। সুস্থ চিন্তার মানুষের প্রতি আক্রমণ। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করতে পারলেই এর প্রতিবাদ হবে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। সংবাদ সম্মেলনে আমির খসরু বলেন, একদিকে দেশ ও জাতির সমস্ত রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। অন্যদিকে দুর্গত মানুষের পাশেও আমরা দাঁড়াতে পারব না। আপনি এখন ত্রাণও দিতে পারবেন না। একটি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ সেক্রেটারি জেনারেলের ওপর এ আক্রমণ। এরপর আর বাকি থাকল কি? এরপর কি আর কোনো রাজনীতি থাকে? এরপর তারা কি চায়? এক জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পাহাড়ে এত প্রাণহানির পর সরকারের উচিত ছিলো রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা। জনগণের প্রতি তাদের কোনো মায়া-মমতা-দরদ নেই। পাহাড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পরে পৌঁছে দেয়া হবে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চেয়ারপারসনের নির্দেশে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল রাঙামাটির উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসি। বিমানবন্দর থেকে আমরা রাঙামাটির উদ্দেশ্যে রওনা হই। পথিমধ্যে জানতে পারি সড়কে যে অংশ ভাঙন আছে সেখান দিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই কাপ্তাই গিয়ে সেখান থেকে নদী পথে রাঙামাটি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের গাড়িবহর রাঙ্গুনিয়া থানা অতিক্রম করে ইছাখালী বাজারে পৌঁছায়। সেখানে তখন প্রচ- বৃষ্টি হচ্ছিলো। এ সময় ৩০-৪০ জন যুবক লাঠি, হকিস্টিক ও পাথর নিয়ে হামলা চালায়। গাড়ির সামনের কাচ একটি বড় পাথর দিয়ে ভেঙে ফেলে। তারপর হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করতে থাকে। ওই গাড়িতে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, আমাদের পাঁচ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবাদ কর্মসূচি: পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটি পরিদর্শনে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে সোমবার ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ করবে বিএনপি।
রোববার দুপুরে কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এই হামলা গণতন্ত্রের প্রতি অশনিসংকেত। বিরোধী দলের নেতারা যাতে পার্বত্য জেলায় পাহাড়ধসে সরকারের ব্যর্থতা সরেজমিন না দেখতে পারে সে জন্য বিএনপি মহাসচিবসহ নেতাদের ওপর এই জঘন্যতম হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, হামলার প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে জেলা ও মহানগর এবং ঢাকার সব থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করছি। একটি মামলায় স্থানীয় আদালতে হাজিরা দেয়ার পর রিজভী হামলার ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খান ও অ্যাডভোকেট এসএম বকর এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নয়া পল্টনে বিক্ষোভ রাঙামাটিতে ত্রাণ দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে নয়া পল্টনে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিলো করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতারা। রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তাৎক্ষণিক এই বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল। আরও অংশ নেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, কেন্দ্রীয় নেতা নাহিদুল ইসলাম সুহাদসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী। ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান জানান, সিনিয়র নেতারা প্রতিবাদ মিছিলো বের করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। ফলে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অল্প সময়ের মধ্যেই মিছিলো শেষ করতে হয়েছে।

বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নিন্দা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল ও সংগঠন। ২০-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী এক বিবৃতিতে বলেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা গণতন্ত্র ও মানুষের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত। দলের নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালীতে বিএনপির মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর গাড়িবহরের ওপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রই অত্যন্ত নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। বিবৃতিতে তিনি বিরোধী দলের ওপর সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন ও দমনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার তীব্র নিন্দা করছি। সারাদেশ যখন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতিক্ষায় প্রহর গুনছে তখন এ ধরনের হামলা গণতন্ত্র প্রত্যাশী মানুষকে শংকিত করে তোলে। আমি অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। বাংলাদেশর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক বিবৃতিতে চট্টগ্রামে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনা সরকারের ও সরকারি দলের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। সরকার একদিকে আইনের শাসনের কথা বলছে অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হামলা-আক্রমণ ও নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে দমন করবার কৌশল গ্রহণ করেছে। এই কৌশল আত্মঘাতী হতে বাধ্য। বিবৃতিতে তিনি অনতিবিলম্বে গাড়িবহরে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

২০-দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা এক বিবৃতিতে বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে রাঙামাটিতে যাওয়ার পথে শাসকদল নগ্নভাবে গাড়ির বহরে হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এক বিবৃতিতে রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে যাত্রার অভিমুখে রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালি বাজারে বিএনপির ত্রাণবাহী গাড়িবহরে হামলা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ওপর নারকীয় হামলার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি-এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার। এক বিবৃতিতে তারা এ ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্র্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান।