যৌতুক ও এনজিও’র ঋণ শোধ দিতে না পারার জের- চুয়াডাঙ্গায় নববধূ ও ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় এক নববধূ ও এক ব্যবসায়ী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। দরিদ্র পিতা জামাইয়ের যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় অভিমান করে নববধূ রজনী খাতুন আত্মহত্যা করেছেন। রজনী আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের শামসুল আলমের মেয়ে এবং দামুড়হুদার ঝোড়াঘাটা গ্রামের রিপন আলীর স্ত্রী। অপর নিহত বিপ্লব হোসেন চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ছাদেক আলী মল্লিকপাড়ার মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি এনজিওর ঋণের জালে জড়িয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে প্রতিবেশীরা মনে করেন।

পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা গেছে, মাস পাঁচেক আগে রজনী খাতুনের বিয়ে হয় ঝোড়াঘাটার সিঙ্গাপুর প্রবাসী রিপন আলীর সাথে। রজনীর পিতা শামসুল আলম অভিযোগ করেন ‘বিয়ের সময় মোটরসাইকেল, ফ্রিজ ও খাট দেয়ার কথা ছিলো জামাই রিপনকে। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে শোধ করতে পারছিলাম না। তার কাছে সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু জামাই আমার মেয়ে রজনীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। প্রায়ই খোঁটা শুনতে হতো রজনীকে।’ এক পর্যায়ে রজনী গত মঙ্গলবার দুপুরে বিষপান করেন। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি মারা যান। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত জামাই রিপনসহ তার পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে সটকে পড়েছে বলে এলাকাসূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সাদেক আলী মল্লিক পাড়ার মোজাম্মেল হকের ছেলে জ্বালানি তেল ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। সম্প্রতি ব্যবসায় লোকসান খেয়ে ব্যবসার অবস্থা নাজুক হয়ে যায়। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন বিপ্লব। অনেক এনজিও ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য চাপাচাপি করতে থাকে বিপ্লবকে। এরই মধ্যে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি বিষপান করেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর আধাঘণ্টা পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত ডা. সোনিয়া আহমেদ।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক জানান, ‘রজনীর পিতা অপমৃত্যু মামলা করেছেন। অভিযোগ থাকায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর বিপ্লবের লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।’