যাত্রাবাড়ীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিজ বাসায় কলেজছাত্র খুন

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীতে বাসায় ঢুকে বখতিয়ার মোহাম্মদ লতফি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রকে গুলি করে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটা থেকে পৌনে ৩টার মধ্যে উত্তর যাত্রাবাড়ীর সাজেদা ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন ৯৬ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে পরিবারের অন্যদের জিম্মি করে কিছু স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে যায়। তবে আইফোন ও আইপ্যাডসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থাকলেও সেগুলো নেয়নি। পুলিশ ও পরিবারের লোকজন বলছে, ঘটনা পূর্ব-পরিকল্পিত। পুলিশ বাড়ির এক গৃহকর্মীর স্বামী রাসেলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বাড়ির মালিক ও নিহত ছাত্রের বাবা জাহদি আল লতফি খোকা বাংলাভিশনের বার্তা সম্পাদক শারমিন রিনভীর বড় ভাই। তিনি বিএনপির যাত্রাবাড়ী থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির পেছনের দিকের গেটের তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকেছিলো দুর্বৃত্তরা। তারা সংখ্যায় ৬-৭ জনের বেশি হবে না। পরিবারের লোকজনের দাবি, পেছনের গেট কখনোই খোলা হয় না। সবসময়ই তালা দেয়া থাকে। তবে গতকাল সকালে গিয়ে পেছনের গেট খোলা দেখা গেছে। কোন তালা তাতে ছিলো না।

ব্যবসায়ী জাহদি আল লতফি খোকা, তার মা, স্ত্রী ও খুন হওয়া ছেলে বখতিয়ার ছাড়াও দুই গৃহকর্মী ওই বাড়িতে থাকতেন। বখতিয়ারের মা শামসুন্নাহার ফেরদৌসী বলেন, রাত পৌনে ৩টার দিকে আমি, বখতিয়ার ও একজন গৃহকর্মী বেডরুমে বসে টিভি দেখছিলাম। পাশেই ওর বাবা ঘুমাচ্ছিলেন। রুমের মধ্যে এয়ারকন্ডিশনার চলায় দরজা-জানালা সব বন্ধ ছিলো। হঠাত অনেক লোকজনের সাড়া পেয়ে বখতিয়ার রুম থেকে বের হয়। লোকজন দেখে বখতিয়ার চিত্কার করলে একটি গুলির শব্দ শুনতে পাই। বেরিয়ে দেখি বখতিয়ার মেঝেতে লুটিয়ে পড়েছে। ছেলেকে ধরতে চাইলে ওরা আমাকে বাধা দেয়। একটা অল্পবয়স্ক ছেলে বলে ওঠে চিত্কার করবি না, তোদের জন্যই আমাদের এ অবস্থা। এরপর লোকগুলো আমাদের হাত পেছনে মোড়া দিয়ে বেঁধে রুমে আটকে রাখে। একপর্যায়ে আলমারির চাবি চায়। একটা আলমারির চাবি দিলে সেটি খুলে সবকিছু তছনছ করে। আরেকটি আলমারির চাবি ক্যান্টনমেন্টে থাকার কথা বললে সেটির তালা ভেঙে ফেলে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে জিনিসপত্র তছনছ করে কিছু নিয়ে যায়, আর কিছু ফেলে যায়।

জাহদি আল লতফি খোকা বলেন, গুলি খেয়ে চোখের সামনে ছেলেটা ছটফট করছিলো। কিছুই করতে পারলাম না। ও পানি, পানি বলে চিত্কার করছিলো, তবু তাকে এক ফোঁটা পানি দিতে পারিনি। একজন বাবা হিসেবে এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে। কি উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা এসেছিলো এমন প্রশ্নের পরিষ্কার কোনো জবাব তিনি দেননি। তবে বিষয়টি ডাকাতি বলেও মানতে রাজি নন তিনি।