যতো অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশে তাকে উৎখাতের

সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গার ডিঙ্গেদহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দাবি

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ডিঙ্গেদহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক এমএসএম মোখলেসুর রহমানের পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতি। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব হলরুমে এ সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক নিজেই। তিনি দাবি করেন তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত টাকা আত্মসাৎসহ সকল অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শঙ্করচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমানের নির্দেশেই তার ওপর হামলা করেন এসএমসি সদস্য আব্দুস সাত্তার।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএসএম মোখলেসুর রহমানকে গত ১৩ অক্টোবর স্কুল চলাকালীন মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়। সকাল ১০টায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির এক জরুরিসভায় তাকে ডেকে কৈফিয়ত তলবসহ ৩০ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক দাখিলকৃত দরখাস্তটি চাওয়া হয়। প্রধান শিক্ষক সেটি না দেয়ায় আব্দুস সাত্তার তার জামার কলার ধরে মারপিট করেন। এ সময় সভাপতি মো. আব্দুর রহমান ও সদস্য শওকত মাহমুদ প্রধান শিক্ষককে তুইতুকারি করে অশালীন ভাষায় গালাগালি করেন এবং তাকে স্কুলের বাইরে বের করে দিতে বলেন। সেই মোতাবেক প্রধান শিক্ষককে ুলের বাইরে বের করে দেন আব্দুস সাত্তার। এ ছাড়া হুমকি দেয়া হয় স্কুলে ঢুকলে ঠ্যাং ভেঙে দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে পরদিন ১৪ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদসভা ডাকে এবং ঘটনার নিন্দা জানায়। পরদিন তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি জিডি করেন। এর পরদিন গত ১৬ অক্টোবর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৬১ লাখ ৫৬ হাজার ২৫৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন। গতকাল বেলা ১১টায় একই স্থানে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান আত্মসাতের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে জানান, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক। তিনি বলেন গ্রামীণ একটি বালিকা বিদ্যালয়ের তহবিলে এত পরিমাণ টাকা থাকতে পারে না। তিনি দাবি করেন শঙ্করচন্দ্র ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত নুর আলী ও তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি যাবতীয় খরচাদি নিজ তত্ত্বাবধানে করেছে। যার সমুদয় খরচের বিলভাউচার বিদ্যালয়ে জমা আছে। যা তদন্ত করলেই প্রমাণ মিলবে।

টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমানকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বহিষ্কার করে। এ নিয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ডে আবেদন জানান প্রধান শিক্ষক। তদন্ত শেষে প্রধান শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহালের জন্য এ বছরের ২৩ মার্চ সভাপতি বরাবর চিঠি ইস্যু করে বোর্ড। কিন্তু তাকে যোগদান করতে না দিয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়া মো. শরীফ উদ্দীনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি ননএমপিও হলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতনবিলে সই করেন বলেও অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সম্পাদক মো. রাশেদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য সাংবাদিক সম্মেলনে পাঠ করেন ডিঙ্গেদহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান। তাতে বলা হয় ‘প্রকৃত ঘটনা হলো- এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে ও অসৎ পরিকল্পনায় প্রধান শিক্ষক মোকলেচুর রহমানকে উৎখাতের হীন মানসিকতার পরিচায়ক।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাশিস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি ফজলুর রহমান, সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম আলী আখতার, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মজিবুল হক, বাশিস সদর উপজেলা শাখার সভাপতি নূর মোহাম্মদ, ভোগাইল বগাদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান প্রমুখ।