মেহেরপুরে শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ মানববন্ধন

 

মেহেরপুর অফিস/মুজিবনগর প্রতিনিধি: মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোরাদ হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও একই প্রতিবাদে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির শিক্ষকবৃন্দ। গতকাল বুধবার সকালে দিকে ওইসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

বেলা ১১টার দিকে মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সামনের সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলে তাদের বিক্ষোভ। এ সময় মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন ওই কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ ওয়ালিউল্লাহ সোহাগ। এ সময় সেখানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা পরাগ, শাহ আলম, ফারুক হোসেন, তুষার, ইমরান প্রমুখ। ওই সময় খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশের এসআই সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়। ছাত্রনেতারা দোষীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন অন্যথা হলে ব্যাপক আন্দোলন কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে।

এদিকে শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে একই সময়ে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন মেহেরপুর জেলা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.কে.এম সোলাইমান, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আসাফ-উদ দৌল্লা, মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর স্বপন কুমার রায়, প্রভাষক আলিমউদ্দিন শেখ, মেহেরপুর সরকারি কলেজের ইংরাজি বিভাগের প্রভাষক কাবিল উদ্দীন প্রমুখ।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, কলেজের জমি নিয়ে শিক্ষকের সাথে শত্রুতা করা ঠিক নয়। একজন আইনজীবী হয়ে শিক্ষকের ওপর হামলা করে ওই আইনজীবী তার নৈতিকতা বিরোধী পরিচয় দিয়েছেন। আইনজীবী সমিতির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, এ ধরনের আইনজীবীকে আপনারা সমিতি থেকে প্রত্যাহার করুণ। প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, দ্রুত ওই হামলাকারী আইনজীবীসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার কারে বিচারের মুখোমুখি করুন। তা না হলে সারাদেশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আমরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে প্রভাষক মোরাদ হোসেন মোটরসাইকেলযোগে কলেজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। কলেজের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের চকশ্যামনগর গ্রামের মাঠের কাছে পৌঁছুলে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের আইনজীবী শাহিনুর রহমান এবং তার আত্মীয় সদর উপজেলার বামনপাড়া গ্রামের নান্নুর দুই ছেলে আসাদুল ইসলাম ও রাশেদ তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। পরে আইনজীবী শাহিনুর রহমান প্রভাষক মোরাদ হোসেনের মাথায় থাকা হেলমেট খুলে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এ সময় তিনি মাটিতে পড়ে গেলে অপর দুজন আসামি আসাদুল ইসলাম ও রাশেদ ইট দিয়ে তার শরীরে আঘাত করেন। তার চিৎকার শুনে আশাপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি ওই দিন রাতে মেহেরপুর সদর থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন।

এদিকে গতকাল বুধবার বেলা ৩টার দিকে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ মামলার এজহারভূক্ত আসামি আসাদুল ইসলাম ও রাশেদকে আটক করেছে বলে জানান সদর থানার ডিউটি অফিসার এসআই আবু সায়েম।