মেহেরপুরের কতিপয় অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ী : কয়েকগুণ মুনাফা হাতিয়ে নিতে বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করছে

 

মেহেরপুর অফিস: কয়েকগুণ বেশি মুনাফা পেতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হারে নেয়া হচ্ছে। মেহেরপুর হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর সামনে অবস্থিত কতিপয় অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ী রোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের জিম্মি করে ওষুধের দাম এমআরপি রেট থেকেও বেশি নিচ্ছে। এমন অভিযোগ একাধিক রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের। আর এসব কাজে ব্যবহার করা হয় একটি সঙ্গবদ্ধ দালালচক্রকে। মেহেরপুর শহরের তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ আব্দুল্লাহ বাপ্পী এমনই একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলা প্রশাসক ও সাংবাদিকদের কাছে।

গত ৬ জানুয়ারি সকালে বাপ্পীর স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার ব্যবস্থাপত্রে কিছু ওষুধ লিখে দেন। তিনি ওষুধগুলো কিনতে ছুটে যান হাসপাতালের সামনে মেহেরুল্লাহ ফার্মাসিতে। ওষুধগুলো কেনার পর দাম নিয়ে তার সন্দেহ হয়। পরে তিনি ওই ওষুধগুলো নিয়ে হাসপাতালের সামনের কয়েকটি দোকানে প্রকৃত মূল্য যাচাই করেন। তিনি পর্যবেক্ষণ করে দেখেন তার ওষুধগুলোর প্রকৃত মূল্য ২৭৯ টাকা মাত্র। অথচ ওই ফার্মেসির মালিক তার কাছ থেকে নিয়েছেন ৭৮০ টাকা। দোকানদার ওষুধের সাথে একটি ৭৮০ টাকার ভাউচারও ধরিয়ে দেন। এমন অভিযোগ শুধু তারই নয়। এ অভিযোগ একাধিক রোগীর স্বজনদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগীর স্বজন জানিয়েছেন, কিছু কিছু ফার্মেসির একাধিক দালাল রয়েছে। তারা অবস্থান করেন হাসপাতালের মধ্যে। কোনো রোগী ভর্তি হলে তারা ছুটে যান সে রোগীর স্বজনদের কাছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রোগীর ব্যবস্থাপত্রটি চলে যায় দালালচক্রের হাতে। তারা ব্যবস্থাপত্রটি নিয়ে যায় তাদের পছন্দের ফার্মেসিতে। তারপর ইচ্ছেমতো ওষুধের দাম নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় রোগীর স্বজনদের। প্রতিবাদ করার কারও সাহস থাকে না। আবার গভীর রাতে হাসপাতালে কোনো রোগী ভর্তি করা হলে অনেক সময় তারা পড়ে যান যেকোনো দালালের হাতে। দালাল তার ইচ্ছেমতো তাকে নিয়ে যায় তার পছন্দের ফার্মেসি মালিকের কাছে। মালিক সূযোগ বুঝে রোগীর স্বজনের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের কাছ থেকে ওষুধের প্রকৃত মূল্য থেকে দু থেকে তিনগুণ বেশি দাম নিয়ে থাকেন।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের গেট ও শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকের কাছাকাছি অবস্থিত ফার্মেসি দোকানগুলো থেকে এভাবে অসুস্থ রোগীর অসহায় আত্মীয়-স্বজনদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেয়া দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি দাম যাতে না নিতে পারে সে দাবি মেহেরপুরের সুধীজনদেরও।