মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে পারলেই যুবসমাজকে নৈতিক অবক্ষয় থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর বলেছেন, দেশের যুবসমাজ যখন দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে এগিয়ে আসছে তখন মাদক বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মাদক দেশের উন্নয়নের অন্তরায়। মাদক দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করার অন্যতম হাতিয়ার। মাদকের ভয়াবহতা থেকে দেশের যুবসমাজকে রক্ষা করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মাদকের ভয়াবহতা হতে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আজকের এই মাদকদ্রব্য ধ্বংস করণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য সেবনে নিরুসাহিত হয়ে একদিন বাংলাদেশ মাদকমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি উপস্থিত সকলকে আহ্বান জানান। দেশকে মাদকমুক্ত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে বিজিবি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক কষ্টের মধ্যে বিজিবি সদস্যরা দেশের জন্য কাজ করছেন। মাদকমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বিজিবি ও পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার ৬ বিজিবির আয়োজনে মাদকদ্রব্য ধ্বংস করণ এবং মাদকবিরোধী মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এমপি টগর আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য পুত্র তথ্য উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে দেশ ডিজিটালে পরিণত হয়েছে। দেশের প্রতিটি উন্নয়নে যুবসমাজ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। আজ আমাদের দেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪শ ডলার। এ সময় তিনি আরও বলেন, বর্তমান যুবসমাজকে আগামীদিনের দেশ গড়ার যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন মাদকমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে পারলেই যুবসমাজকে নৈতিক অবক্ষয় থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে। সন্তানদের মাদক থেকে দূরে রাখতে পিতাকে-মাতা প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টাউন ফুটবল মাঠে চুয়াডাঙ্গা বিজিবি-৬ ব্যবস্থাপনায় পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর বিজিবি রিজিয়ন কমাণ্ডার অতিরিক্ত মহাপরিচালক খোন্দকার ফরিদ হাসান, কুষ্টিয়া সেক্টর কমান্ডার উপমহাপরিচালক হ্লা হেন মং, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান। চুয়াডাঙ্গা বিজিবি-৬ অতিরিক্ত পরিচালক আনোয়ার জাহিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ড. এবিএম মাহমুদুল হক, জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ অমল, জীবননগর পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, দর্শনা পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মতিয়ার রহমান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসলাম হোসেনসহ এলাকার জনসাধারণ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি আজাদ মালিতা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসলাম হোসেন। জনসাধারণের মধ্যে মত প্রকাশ করেন যুবলীগ নেতা অ্যাড. তসলিম উদ্দিন ফিরোজ, দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসম্পাদক পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম জাকারিয়া আলম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জানিফ, জেলা এনসিটিভির সাবেক সভাপতি কানন আহমেদ, নাইটিঙ্গেল ক্রিকেটের ছাত্র ইয়াসিন আরাফাত ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের ক্যাপ্টেন সোহেল।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অতিথিবৃন্দ নিজ হাতে মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ কাজের উদ্বোধন করেন। মাদক সমাজকে ধ্বংস করে, ৬ বিজিবি মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার’ ফেনসিডিলের বোতল দিয়ে লেখাসংবলিত সারি রুলার দিয়ে ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসকৃত মাদকের তরল ড্রেনের মাধ্যমে নিষ্কাশন করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২০১৪ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত আটককৃত বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য রুলার দিয়ে ধ্বংস করা হয়। মাদকদ্রব্রের মধ্যে ছিলো ৪৩ হাজার ৭শ ৯০ বোতল বিদেশি মদ, ৩৭ হাজার ৮০১ বোতল ফেনসিডিল এবং ১৮ কেজি ৬শ গ্রাম গাঁজা।