ভূয়া তথ্য দিয়ে ব্যাংক লোন জালিয়াতির অন্যতম নায়ক নাগদাহর বুলবুল আটক

ব্যাংক জালিয়াতির হোতাদের গ্রেফতার করতে আলমডাঙ্গার এসি ল্যান্ডের অভিযান

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: খাজনা পরিশোধের রশিদসহ ব্যাংক লোনের প্রয়োজনীয় সমুদয় ভূয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে লোন করিয়ে দেয়ার অভিযোগে পেশাদার জালিয়াত বুলবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লোনের প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জাল করে ব্যাংকে জমা দিয়ে লোন পাইয়ে দেয়ার শর্তে শতকরা ৩০ ভাগ টাকা অগ্রিম হাতিয়ে নিতো। গতকাল কৃষি ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখার ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

জানা গেছে, গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলার নতিডাঙ্গা গ্রামের কাশেম আলির ছেলে শাফায়েত আলি গতকাল কৃষি ব্যাংক আলমডআঙ্গা শাখায় যান ব্যাংক লোনের জন্য। ১০ হাজার টাকা লোনের জন্য তিনি নিজ নামীয় জমির খাজনা প্রদানের রশিদ, রেকর্ডের কপি ও মাঠ পরচা জমা দেন। নিয়মমাফিক ব্যাংকের ম্যানেজার তার লোনের ফাইল চেক করতে গেলে কিছু কাগজপত্রের সঠিকতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন। তিনি ওই লোনের আইওকে শাফায়েতের দেয়া তথ্য পরীক্ষা করতে ভূমি অফিসে পাঠান। আইও ভূমি অফিসে গিয়ে দেখতে পান শাফায়েতের দেয়া দাখিলার সিরিয়াল নং, খাজনা পরিশোধের রশিদ ও খতিয়ানসহ সরবরাহকৃত তথ্য সবই ভূয়া। বিষয়টি সহকারী কমিশনারকে (ভুমি) জানালে তিনি শাফায়েতকে আটক করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কে তাকে এ সকল জাল কাগজপত্র তৈরি করে দিয়েছে? জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে তার নাম বললে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে এসিল্যান্ডের এমন প্রতিশ্রুতি পেয়ে সে মুখ খুলতে থাকে।

এক পর্যায়ে শাফায়েত জানায় নাগদাহ গ্রামের মৃত বরকত আলির ছেলে বুলবুল হোসেন (৫০) জাল কাগজপত্র তৈরি করে দিয়ে ব্যাংক থেকে তাকে ১০ হাজার টাকা লোন তুলে দেবে। এ লোন তাকে শোধ করতে হবে না। এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বুলবুল শাফায়েতের  নিকট থেকে অগ্রিম ৩ হাজার টাকাও নিয়েছে। এ তথ্য জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীনুজ্জামান পুলিশ সাথে নিয়ে বাড়ি থেকে বুলবুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসেন। সে সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করলে বুলবুল জাল কাগজপত্র সরবরাহের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। বুলবুল জানায়-সে প্রতারকচক্রের সদস্য। চুয়াডাঙ্গা শহরের ১নং পানির ট্যাঙ্কের নিকটের এক হিন্দু ধর্মাবলম্বীর নিকট থেকে সে ওই জাল খাজনা আদায়ের রশিদ, দাখিলা, খতিয়ান, পরচা সংগ্রহ করে। পৃথক আরেকজনের নিকট জেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ অফিসারের সিল আছে। তার নিকট থেকে স্বাক্ষর ও সিল মেরে আনে। সে অনেকের স্বাক্ষর জাল করতে পারে। তাদের চক্রে বেশ কয়েকজন আছে। সকলকেই টাকার ভাগ দিতে হয়। এ সম্পর্কে আর বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করলে সে বলতে রাজি হয়নি। বরং টাকা নিয়ে ছেড়ে দিতে বার বার পুলিশকে অনুরোধ করেন। বুলবুল এলাকায় এ ধরনের বহু ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী তথ্য দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন। প্রতারণাপূর্বক জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ আজ শুক্রবার তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হতে পারে।