বেলেল্লাপনার দায়ে নতিপোতা হাইস্কুলের ৯ ছাত্র-ছাত্রী বহিষ্কার : শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ

ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে ছুটির পর শ্রেণিক্ষকে অশ্লীল দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ায় চরম উত্তেজনা

 

দামুড়হুদা অফিস/প্রতিনিধি: দামুড়হুদার নাতিপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির সাত ছাত্র ও দু ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বেলেল্লাপনার দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের চাপের মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার ম্যানেজিং কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়। একই সাথে অভিযুক্ত ছাত্র সৈকতের পিতা বিদ্যালয়েরই সহকারী শিক্ষক আব্দুল মোমিনকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় জনগণ সবুজ নামের এক ছাত্রকে পিটুনি দিয়েছে। তাকে অবশ্য পিটুনির সময় পুলিশ উদ্ধার করে। স্থানীয়রা বলেছে, ক্ষুব্ধ জনতা সবুজকে যেভাবে পিটুনি শুরু করেছিলো তা ঠেকাতে পুলিশ বিলম্ব করলে পরিস্থিতিটাই পাল্টে যেতো। বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সূত্র ধরেই বিদ্যালয়েরই এক শ্রেণিকক্ষে আপত্তিকর মেলামেশার দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করা হয়। আর তা নিয়ে গোটা এলাকায় ছড়িয়েছে চরম উত্তেজনা। রাজনৈতিক রঙও লাগানো হচ্ছে বলে ইতোমধ্যেই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মোমিনের ছেলে সৈকতকেই বেশি দোষারোপ করেছে স্থানীয় অভিভাবকদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, ওই সৈকত ৯ম শ্রেণির ছাত্র। সে তার কয়েক সহপাঠীকে সাথে নিয়ে বিদ্যালয় বন্ধের সময় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নির্জন শ্রেণিকক্ষে অবস্থান নেয়। সেখানে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশাসহ দু ছাত্রীর শ্লীলতাহানিসহ ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশার দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে। বিষয়টি কয়েকদিন ধরে জানাজানি হতে থাকে। ভিডিও ক্লিপ হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ে। অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দানা বাঁধে। গতকাল ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা সবুজ নামের এক ছাত্রকে ধরে পিটুনি দেয়। অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। বিকেলে ম্যানেজিং কমিটি বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাত ছাত্র ও দু ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়। এরা হলো- সৈকত, সাগর, রুবেল, সবুজ, লাভলু, উর্মি ও হ্যাপি। (অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হলো না।)

ক্ষুব্ধ অভিভাকদের অভিযোগ সৈকত, লাভলু, জামসেদসহ কয়েকজন ছাত্র একের পর এক অপরাধ করে আসছে। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। কিছুদিন আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আ. কুদ্দুস স্কুলের এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে ধরা পড়লেও এলাকার কিছু প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তিনি পার পেয়ে যান। এবারও অভিযুক্তরা পার পেয়ে যেতে পারে আশঙ্কায় অভিভাবকরা সংগঠিত হয়ে আন্দোলনমুখি হয়ে ওঠেন। সৈকত শিক্ষকের ছেলে হওয়ার পরও তাকে তার পিতা সুপথে রাখতে না পারার কারণে পিতার বিরুদ্ধেও ক্ষুব্ধ জনতা স্লোগান দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করার দাবি তুলতে থাকেন। অবশ্য ব্যবস্থাপনা পরিষদ বৈঠক থেকে তিন দিনের মধ্যে কৈফিয়ত তলব করে নোটিশ দিয়েছে। বর্তমানে স্কুল এলাকা ও নতিপোতা গ্রামে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।