বেতন বাড়ছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের

স্টাফ রিপোর্টার: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরতদের বেতন বাড়ানোরসিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা, যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশসহশান্তিরক্ষী সরবরাহকারী কয়েকটি দেশের প্রায় এক দশকেরও বেশি সময়ের কূটনৈতিকপ্রচেষ্টা সফল হতে চলেছে।গত বৃহস্পতিবারজাতিসংঘ সদরদপ্তরে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে শান্তিরক্ষীদের বেতন বাড়ানোরবিষয়ে মতৈক্য হয় বলে জানা গেছে।শান্তিরক্ষামিশনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমানে শান্তিরক্ষীরা ১ হাজার ২১০ মার্কিন ডলার মাসিক বেতন পাচ্ছেন। এটি বাড়িয়ে ১হাজার ৪০০ ডলার করার ব্যাপারে তারা একমত হয়েছেন।শান্তিরক্ষামিশনের সৈন্য, পুলিশ এবং বেসামরিক কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব জাতিসংঘ সাধারণঅধিবেশনে প্রস্তাব (রেজ্যুলেশন) আকারে গৃহীত হওয়ার পরই তা কার্যকর হবে। আর পর্যায়ক্রমেচার বছরের মধ্যে এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ঘটবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।চলতিসাধারণ অধিবেশনে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, এমনটাইআশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানেজাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক শান্তিরক্ষী পাঠানো বাংলাদেশের পক্ষ থেকেগত কয়েক বছর ধরেই শান্তিরক্ষীদের বেতন বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছিলো।এক্ষেত্রেবাংলাদেশের প্রস্তাব ছিলো শান্তিরক্ষীদের বেতন বাড়িয়ে ১ হাজার ৭০০ ডলার করার। বাংলাদেশেরপ্রস্তাবে ভারত, পাকিস্তানসহ আফ্রিকার দেশগুলোরও সমর্থন ছিলো।তবেমিশনের অর্থ প্রদানকারী দেশগুলোর অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশসম্মতি না দেয়ায় বেতন বাড়ানোর বিষয়টি গত এক দশক ধরে ঝুলে ছিলো।জাতিসংঘেবাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এ কে এ মোমেন বলেন, অনেক চেষ্টার পর শান্তিরক্ষামিশনের বাজেট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার করা হয়েছে। যদিও সারা বিশ্বে সামরিক খাতেউন্নত দেশগুলো বছরে যে তহবিল ব্যয় করছে তার তুলনায় এ বাজেট এক শতাংশেরও কম।তিনিবলেন, বর্তমান বাজার দরের আলোকে মাসিক বেতন ১ হাজার ৭০০ ডলার হওয়া উচিত ছিলো এবং আমরাদীর্র্ঘদিন ধরে সে চেষ্টা করছিলাম। একইসাথে বাংলাদেশের দাবি রয়েছে শান্তিরক্ষা মিশনেরঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যায়ে আরো বেশি বাংলাদেশিকে অন্তর্ভুক্তির।
জাতিসংঘথেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ৩১ মে পর্যন্ত আফগানিস্তানে একটি পুনর্গঠন মিশনসহ বিভিন্নদেশে মোট ১৭টি মিশনে এক লাখ ১৭ হাজার ৯৬৭ জন শান্তিরক্ষী কর্মরত আছেন।এর মধ্যেসেনাবাহিনীর সদস্য ৮৪ হাজার ৫১১, পুলিশ ১২ হাজার ৪০১, সামরিক পর্যবেক্ষক এক হাজার ৮৪৩, বেসামরিক ১৭ হাজার ১৯০ জন। এসব মিশনে ১২২টিদেশের সেনা ও পুলিশ রয়েছে।শান্তিরক্ষামিশনের তথ্য অনুযায়ী, এসব মিশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আট হাজার ৮১০ জন্য শান্তিরক্ষীকর্মরত আছেন। এর মধ্যে সেনাসদস্য সাত হাজার ৩৭ এবং পুলিশ এক হাজার ৬৯৮ জন। এছাড়া বিভিন্নমিশনের কমান্ডিং অফিসারসহ সদরদপ্তরের কর্মকর্তা মিলিয়ে আরো ৭৫ জন রয়েছেন।শান্তিরক্ষীপাঠানো শীর্ষ অন্য দেশগুলো হচ্ছে- ভারত (৮১৩৩), পাকিস্তান (৭২৫১), ইথিওপিয়া (৬৬১৩)ও নেপাল (৪৭৬২)।