বিক্ষোভ কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের দেখা মেলেনি

পুলিশি অভিযান অব্যাহত : গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়িছাড়া অনেকে
স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রায়ের পর গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়। শুক্রবার জুমার পর কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরও বেশকিছু গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও কিছু আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে কোথাও পরিস্থিতির তেমন অবনতি হয়নি। আতঙ্কে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ঘরে থাকছেন না বলে খবর পাওয়া গেছে। চুয়াডাঙ্গা ও মেরহপুরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাইরে বের হতে দেখা যায়নি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মঞ্জুরুল জাহিদ এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে করেছে ছাত্রদল। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মঞ্জুরুল জাহিদের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কোর্টে চত্বরের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মিছিলে অংশ নেন জেলা ছাত্রদলের ১নং সদস্য তৌহিদুজ্জামান তৌহিদ, সদস্য এসএম হাসান, জুয়েল, তোহফাতুর রিংকু, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, রাসেল আহমেদ, ডালিম প্রমুখ।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোমিনুর রহমান মোমিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহমেদকে গ্রেফতার করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা ছাত্রদল। জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ফিরোজ সরোয়ার রোমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক রাজীব খান, শাহজাহান খান ও মোমিনুর রহমান মোমিন যৌথ প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসানকে গ্রেফতার করা হয়েয়ে শুধুমাত্র বাকশালী শাসনের পথ নিষ্কন্টক রাখার জন্য। জেলা ছাত্রদলের পক্ষে রাজিব আহসানকে দ্রুত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দূর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও দামুড়হুদায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি পালিত হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে কর্মসূচি পালিত না হলেও দামুড়হুদার বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে অন্যান্য দিনের ন্যায় লোকাল বাস চলাচল করতে দেখা দেছে। অপরদিকে ক্ষমতাসীন দলের কাউকেও রাস্তায় মিছিল বা সভা-সমাবেশ করতে দেখা যায়নি।
বেগমপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নাশকতামূলক কর্মকা-ের ঘটনার আশঙ্কায় চুয়াডাঙ্গা সদরের বেগমপুর ইউনিয়নের দোস্ত ও শৈলমারী গ্রাম থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের সদর থানায় সোপর্দ করেছে পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা সদর বেগমপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রবিউল ইসলাম অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে বেগমপুর ইউনিয়নের শৈলমারী গ্রামের জামাত আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম এবং জাহারুল হকের ছেলে মেহেদি হাসানকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। অপরদিকে, গতকালই রাত ১০টায় হিজলগাড়ী ক্যাম্প পুলিশ অভিযান চালিয়ে দোস্ত গ্রামের হালিম শিকদারের ছেলে বাবু এবং মাহাত্তাব আলীর ছেলে শাজাহানকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ বলেছে, গ্রেফতারকৃতরা নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটাতে পারে এবং ইতোপূর্বেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে সে অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ৪ জনকেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় সোপর্দ করেছে পুলিশ।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি ওয়াহেদ বিশ^াস (৪২), সীমান্ত ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমীর আতিয়ার রহমান (৪৫), উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক আরিফ জাহাঙ্গীর রাজা (৩৮), বিএনপি কর্মী মিলন হোসেন (৩৫) ও মিজানুর রহমানকে (৪৫) গ্রেফতার করে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে ঘিরে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ওসি মাহমুদ নিশ্চিত করেছেন।