বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্যসহ ২০ আগস্টের সকল নির্বাচন স্থগিত

 

স্টাফ রিপোর্টার: বন্যা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে আগামী ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য পদসহ বেশকিছু নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব নির্বাচনের তারিখ পরে ঘোষণা করবে কমিশন। ইসি সচিবালয়ের জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতির কারণে কমিশন ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য একটি উপজেলা, চারটি ইউপির সাধারণ, ৭টি ইউপির উপ-নির্বাচন, একটির পুনঃভোট এবং দুই জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্য পদের উপনির্বাচনসহ সব নির্বাচন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০ আগস্ট চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের সাধারণ ভোট, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ, রায়পুর, রামনাথপুর ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউপির সাধারণ, পাবনার সুজানগরের আহম্মদপুর, পটুয়াখালীর দশমিনার বহরমপুর, যশোরের মনিরামপুরের হরিহরনগর, মেহেরপুরের গাংনীর ষোলটাকা, চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা, ফেনী সদরের ধলিয়া, মৌলভীবাজার সদরের মনুমুখ ইউপির বিভিন্ন পদে উপনির্বাচন, নোয়াখালী সেনবাগের নবীপুর ইউপির পুনঃভোট এবং নারায়নগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সদস্য পদের উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো। কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনগুলো স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন জেলা ভোটের শিডিউল থাকলেও আপাতত সেগুলি স্থগিত করা হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে ওই নির্বাচনগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।

প্রসঙ্গত, জানা গেছে, ২৮ ডিসেম্বর দেশের বিভিন্ন জেলার ন্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়ন বিভাজন নিয়ে আইনি জটিলতায় স্থগিত হয়ে যায় ৩ নং ওয়ার্ডের পুরুষ সদস্য নির্বাচন। আইনি জটিলতা কাটিয়ে পুনরায় ৩নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করে জেলা নির্বাচন কমিশন। তফশিল ঘোষণার পর ১৩ জন ভোটারের বিপরীতে মনোনয়ন সংগ্রহ করে ৭ জন প্রার্থী। প্রার্থীরা হলেন- শফিকুল ইসলাম, আব্বাচ আলী, আকলাকুর রহমান আজাদ, জহুরুল ইসলাম, লাল্টু, মানিকুজ্জামান মানিক, ও নুরুল ইসলাম। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি নুরুল ইসলাম। প্রত্যাহারের শেষদিনে আকলাকুর রহমান আজাদ এবং লাল্টু তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। বাকি ৪ জনের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয় নির্বাচন কমিশন। এদের মধ্যে মানিকুজ্জামান মানিক (হাতি), আব্বাচ আলী (ফ্যান), শফিকুল ইসলাম (টিউবওয়েল) এবং জহুরুল ইসলাম (তালা) প্রতীক নিরব প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ২০ আগস্ট হিজলগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩ নং ওয়ার্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জেলা নির্বাচন সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্নও করেছে। গতকাল বুধবার বিকাল ৫টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশন থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসে বার্তা আসে বন্যা ও প্রাকৃত দুর্যোগের কারণে দেশে যেকোনো ধরনের নির্বাচন আপাতত স্থগিত থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা এলে স্থগিত হওয়া নির্বাচনগুলো পুনরায় অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজু আহমেদ বলেন, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের নির্বাচন আপাতত স্থগিত থাকবে। পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং নির্দেশনা এলে এ ওয়ার্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য পদপ্রার্থী মো. মানিক উজ্জামান বলেছেন, চুয়াডাঙ্গায় যেহেতু বন্যাদুর্গত নয়, সেহেতু চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য পদের নির্বাচনী স্থগিত না করে নির্ধারিত দিনেই সম্পন্ন করা উচিত। তাছাড়া একটি মাত্র কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোটার সংখ্যাও কম। বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনার অনুরোধ জানিযেছেন তিনি।