বন্ধুকে টাকা ধার দিয়ে সম্পর্ক গড়ায় শত্রুতায় টাকা উদ্ধারে অপহরণ করা হয় বন্ধুর এক বছর বয়সী শিশুকে

মেহেরপুর অফিস: মরিশাস থাকার সময়ে জাহাঙ্গীর আলমকে ৪০ হাজার টাকা ধার দেয় বন্ধু রায়হান। দুজনে দেশে ফিরলেও ধার পরিশোধ করতে পারেননি জাহাঙ্গীর। এ নিয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ায় শত্রুতায়। টাকা উদ্ধারে ঢাকার গুলবাগের বাসা থেকে বন্ধু জাহাঙ্গীরের এক বছর বয়সী কন্যাশিশুকে অপহরণ করেন মেহেরপুরের মনোহরপুর গ্রামের রায়হান আলী। ধার পরিশোধ করে শিশুকে ফেরত চাইলেও লোভ ছাড়েনি রায়হান। শিশুর মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করে আরও ৭ লাখ টাকা। অবশেষে মেহেরপুর জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহরক রায়হান আলীকে (২৫) গ্রেফতার করে। একই সাথে উদ্ধার করা হয় শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসকে। ঢাকার শাহজাহানপুর থানায় জাহাঙ্গীরের দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে মেহেরপুর পুলিশ সুপার একেএম নাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে গতকাল বুধবার বিকেল তিনটার দিকে অভিযান চালানো হয় মেহেরপুর জেলা সদরের মনোহরপুর গ্রামে। সাথে ছিলেন সদর থানার ওসি রিয়াজুল ইসলাম ও ওসি (ডিবি) বাবুল আক্তারসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রাত ন’টার দিকে প্রেসবিফ্রিঙে অভিযান ও অপহরণ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেন ওসি রিয়াজুল ইসলাম। তিনি বলেন, টাকা আনার জন্য বেশ কয়েকদিন জাহাঙ্গীরের গুলবাগের বাসায় যান রায়হান। টাকা না পেয়ে শিশুকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেন। সে মতে গত ২ জানুয়ারি দুপুরে আবারো জাহাঙ্গীরের বাসায় যান। তখন জাহাঙ্গীর বাসায় ছিলেন না। জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ফিরোজা আক্তার ও ছেলে জাফর আহম্মেদকে (১০) বাথরুমে আটকে রেখে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে মেহেরপুর আসে রায়হান। পরদিন শাহজাহানপুর থানায় মামলা করেন জাহাঙ্গীর। এর মধ্যে রায়হান শিশুটিকে ফেরত দেয়ার জন্য ধারের টাকার পাশাপাশি ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। শাহজাহানপুর থানার অনুরোধে অভিযান শুরু করেন মেহেরপুর পুলিশ সুপার। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তাসহ বিভিন্ন কৌশলে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় রায়হানকে। সদর থানার ওসি আরো জানিয়েছেন, শিশুটির পিতা-মাতাকে খবর দেয়া হয়েছে। কাল (আজ) বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত রায়হান ও শিশুটিকে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে। আদালতের নির্দেশ পেলে শিশুটিকে তার পিতামাতার কাছে হস্তান্তর করা হবে।