প্রবাসের স্বপ্নে সম্বল হারা বশির পান করেছে বিষ

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা জোড়গাছার লতিফের নিকট টাকা দিয়ে দিশেহারা

কামরুজ্জামান বেল্টু: প্রবাসে শ্রম বিকিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর স্বপ্নে বিভোর বশিরের কাছে জীবনটাই বিষিয়ে উঠেছে। হয়ে পড়েছে উম্মাদ। আর টাকা নেয়া আব্দুল লতিফ? নানা অজুহাতে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বশিরের নিকটজনেরা এরকমই অভিযোগ করে লতিফের শাস্তি দাবি করেছে।

সামান্য সম্বল আর একমাত্র উপায়ের মাধ্যম করিমন বিক্রি করে পাওয়া এক লাখ ১০ হাজার টাকা দালালের হাতে তুলে দিয়ে যখন বুঝলো টাকাটা ভুল হাতে পড়ে গেছে, তখন দিশেহারা। বিদেশ যাওয়া দূরাস্ত টাকাও ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না দেখে দেখে হয়ে পড়লেন পাগল প্রায়। পাগল কেন হবে না? একমাত্র সন্তান আর স্ত্রীর মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে ক’জন পুরুষই আর সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে পারে? সুস্থ থাকতে পারেনি চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউনিয়নের জোড়গাছা গ্রামের বশির আলী (৩৫)। গতকাল মঙ্গলবার সে বিষপানে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালায়। তাকে উদ্ধার  করে নিকটজনেরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করিয়েছে।

বশির জোড়গাছা গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে। স্ত্রী সন্তান আছে। করিমন চালিয়ে বেশ ভালোই চলছিলো। কিছু টাকাও জমেছিলো তার। এরই মাঝে বশির স্বপ্ন দেখে বিদেশ গিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর। গ্রামেরই আব্দুল লতিফ বিদেশে ভালো চাকরিসহ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। গচ্ছিত ও করিমন বিক্রির মোট এক লাখ ২০ হাজার টাকা বশির তুলে দেয় লতিফের হাতে। লতিফ কখনো চুয়াডাঙ্গায়, কখনো ঢাকায় থাকে বলে জানায়। আজ হচ্ছে কাল হচ্ছে বলে দিনের পর দিন ঘোরাতে থাকে। বশিরের আর বিদেশ যাওয়া হয়নি। সংসারে নেমে এসেছে ভয়াবহ অভাব। অনেকেই তাকে বোকা বলে। তাই তো বিষণ্ণতা তাকে পেয়ে বসে। উম্মাদের মতো আচরণ শুরু করে। জীবনটাই তার কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। গতকাল বশির বিষপানে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালেও তার আচরণ অস্বাভাবিক।