প্রতারক আদমব্যাপারী নজরুল ও সিরাজুলের কাণ্ড : মোটা অঙ্কের বেতনের লোভ দেখিয়ে ৭ জনকে বিদেশ প্রেরণ

দামুড়হুদার সড়াবাড়িয়ার ৭ যুবক সৌদিতে বন্দি জীবনযাপন
দর্শনা অফিস: পরিবারের অভাব ঘুচিয়ে, বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানদের মুখে হাসি ফুটাতে প্রবাসে পাড়ি জমায় অনেকেই। ভিটে-মাটি সহায়-সম্বল বিক্রি করে আদরের সন্তানকে প্রবাসে পাঠাতে টাকা তুলে দেয়া হয় আদমব্যাপারীর হাতে। বিদেশ গিয়ে কারো স্বপ্ন হয় পূরণ, কারো কারো স্বপ্ন হয় ধুলিসাৎ। কেউ ফিরে লাশ হয়ে, কেউ বা বন্দি জীবন কাটিয়ে ফিরতে হয়। এ সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় আদমব্যাপারীর প্রতারণার কারণে। দুজন আদমব্যাপারীর খপ্পরে পরে এ রকমই প্রতারণার শিকার হয়েছেন দামুড়হুদার ৭ যুবক। আদমব্যাপারীদের হাতে অর্ধকোটিরও বেশি টাকা তুলে দিয়ে সর্বস্বান্ত ৭টি পরিবার। সৌদিতে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন ৭ যুবক। অভিযোগের তীর দামুড়হুদার সাড়াবাড়িয়ার নজরুল ও মানিকগঞ্জের সিরাজুলের দিকে। দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের সাড়াবাড়িয়া গ্রামের আ. কাদেরের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, আ. গনির ছেলে এনামুল হক, মজিবর রহমানের ছেল মিলন, কুড়–লগাছি ইউনিয়নের ঠাকুরপুরের আজিজুলের ছেলে শফিকুল, হাবলু, হরিশচন্দ্রপুরের উকিলের ছেলে লিখন ও জিন্নাতের ছেলে রবিউলকে সৌদি আরবে মোটা অঙ্কের বেতনের লোভ দেখায় সড়াবাড়িয়া গ্রামের আলী আহমদের ছেলে নজরুল ইসলাম ও মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার বগুটিয়া পারুলিয়া গ্রামের আ. মজিদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম। আরমদায়ক কাজ ও মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভনে পড়ে ৭ যুবকের পরিবার থেকে মাস সাতেক আগে ভিটেবাড়ি-মাঠের জমি, সমিতির ঋণ উত্তোলনসহ ধার-দেনা করে ৭ লাখ টাকা করে ৪৯ লাখ তুলে দেয়া হয় নজরুলের হাতে। গত বছরের ডিসেম্ববের ১৩ তারিখে ৭ যুবক সৌদি আরবে যাওয়া পর্যন্ত ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো কাজ পায়নি। গত রোজার মাসের শুরুর দিকে ৭ জনকে আকামা (কাজের অনুমতি) বানিয়ে দেয়ার কথা বলে সিরাজুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে বলেও পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছে।
৭ যুবকের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগে আরো জানা গেছে, ৭ মাসে ওদের থাকা খাওয়ার জন্য কয়েকবার বিভিন্ন মাধ্যমে সৌদি আরবে টাকা পাঠানো হয়েছে। ৭ যুবককে নজরুল ও সিরাজুল কোনো এক অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। ৭ যুবকের অভিভাবকরা অভিযুক্ত প্রতারক নজরুল ও সিরাজুলের শাস্তির দাবির পাশাপাশি তাদের সন্তানদের দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়েছেন। এদিকে ৭ যুবকের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছে, তাদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। খেয়ে না খেয়ে কোনোমতে বেছে আছি। তাদের দুর্দশা দেখে কোনো এক বাঙালি প্রবাসি একটি মোবাইলফোন দেয়ায় তারা ফেসবুকে নজরুল ও সিরাজুলের প্রতারণার কথা ফাঁস করতে পারছে বলেও স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ৭ যুবকের পরিবারের পক্ষ নজরুল, সিরাজুলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত নজরুল ও সিরাজুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের সৃদুষ্টি কামনা করা হয়েছে।