প্যাটার্ননীতি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আলমডাঙ্গার হারদী মীর সামসুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার অভিযোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচনী আচরণবিধি মতে আলমডাঙ্গার হারদী মীর সামসুদ্দীন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্যাটার্ন অনুসারে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষক পদ খালি না থাকলেও কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করেই নিয়োগ বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে নিয়োগপত্রে এখনও স্বাক্ষর করেননি বিদ্যালয়ের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য। নির্বাচনী আচরণবিধি ঘোষণার ৬ দিন পর গত ৩০ নভেম্বর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

জানা গেছে, প্যাটার্ন অনুসারে আলমডাঙ্গার হারদী মীর সামসুদ্দীন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে কোনো শিক্ষকের পদ খালি না থাকলেও গত ৩০ নভেম্বর শিক্ষক নিয়োগের নিমিত্তে নিয়োগ পরীক্ষা এমনকি নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কার্যাদিও সম্পন্ন করা হয়েছে। অভিযোগকারীরা আরো জানিয়েছেন, ইতঃপূর্বে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে মাজহারুল ইসলাম নামের এক যুবককে প্যাটার্নবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। তার বেতন না হওয়ার কারণে তিনি চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

প্যাটার্ননীতি ভঙ্গ করে তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। গত ২৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের আচরণবিধি ঘোষণা করে। ঘোষণাকৃত আচরণবিধির ১৪ অনুচ্ছেদের ৪ উপধারায় উল্লেখ করা হয়েছে “কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে পূর্বে সভাপতি বা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত বা মনোনীত হইয়া থাকিলে বা তদকর্তৃক কোনো মনোনীত প্রদত্ত হইয়া থাকিলে নির্বাচনপূর্ব সময়ে তিনি বা তদকর্তৃক মনোনীত ব্যক্তি উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো সভায় সভাপতিত্ব বা অংশগ্রহণ করিবেন না। উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে জডি়ত হইবে না।” আচরণবিধিতে নিষেধ থাকলেও ওই শিক্ষক নিয়োগ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে। যা নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থি। নির্বাচনী আচরণবিধি ঘোষণার ৬ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার তোয়াক্কা না করে এ নিয়োগ দেয়া হলে তা বেআইনি হবে বলে অভিযোগ উঠেছে। মোট ৭ জন ওই পদে দরখাস্ত করেছিলেন। অভিযোগ উঠেছে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার পারকুলা গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেককে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। নিয়োগের জন্য আব্দুল মালেকের পক্ষে যে তিন ব্যক্তি কাজ করছেন, ৪ লাখের মধ্যে তারা ১ লাখ টাকা ভাগাভাগি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্যাটার্ননীতি ও নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপন্থি এ নিয়োগের বৈধতা দেয়া আদৌ সম্ভব না হলেও আব্দুল মালেকের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি এমপি এখনো পর্যন্ত ওই নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। ফলে বিপাকে পড়েছে নিয়োগ সংশ্লিষ্টরা। ওয়াকিবহাল সূত্র জানিয়েছে ওই নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করতে হলে এমপিকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই করতে হবে। সেকারণেই হয়তো এমপি তা করতে রাজি হচ্ছেন না। প্রধান শিক্ষকও জেনে-বুঝে অবৈধ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগ দিতে চাচ্ছেন না। কমিটির অতি উৎসাহী এক সদস্য নিয়োগের জন্য প্রধান শিক্ষককে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন। গতকাল বিকেলে প্রধান শিক্ষককে তিনি লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাইরে থাকতে পরিকল্পিতভাবে দু দিনের ছুটি নিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে নিয়োগ সংশ্লিষ্ট দু সদস্য এমপির স্বাক্ষরের জন্য নানা ধরনের তদবির করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।