পাঁচটি আঞ্চলিক মহাসড়কে কোনো অবৈধ যানবাহন চলাচল করতে পারবে না

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা রোধে যানবাহন পরিচালনাকারী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, জেলার পাঁচটি আঞ্চলিক মহাসড়কে কোনো অবৈধ যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। বড়বাজার শহীদ হাসান চত্বরে বাস থামবে না। মাথাভাঙ্গা ব্রিজের নিকট থেকে বাস সরে গিয়ে ব্রিজের ওপারে দৌলাতদিয়াড় থেকে চলাচল করতে হবে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সড়ক নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা রোধে যানবাহন পরিচালনাকারী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ এসব কথা বলেছেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন ও পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআরটিএ’র পরিদর্শক এসএম সবুজ। এ সময় চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী আতিয়ার রহমান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান ও সহসভাপতি এসএম ই¯্রাফিল, ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মাহবুব হোসেন, জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব, জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হাসান লেমন ও সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন মুক্তা, মোটরমালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এ নাসির জোয়ার্দ্দার, জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রিপন ম-ল, জেলা ট্রাক-ট্যাঙ্কলরি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন ও থ্রি হুইলার সভাপতি আব্দুল মোমিনসহ ইজিবাইক, আলমসাধু ও পাখিভ্যানের চালকরা বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, যানবাহনে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যাত্রীবাহী যানবাহনে যাত্রী এবং মালবাহী যানাবাহনে মালামাল পরিবহন করতে হবে। ব্যবসায়ীরা মালামাল পরিবহনে আলমসাধু থেকে বের হয়ে মিনিট্রাক ব্যবহারে মনোযোগী হতে হবে। পরিবহনে ওভার ট্রেকিং ও ওভারলোড মালামাল পরিবহন করা যাবে না। সড়কে অবৈধ স্থাপনা ও হাটবাজার সরিয়ে নিতে উপজেলা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দোকানের সামনে ব্যবসায়ীরা মালামাল রেখে পথচারীদের অসুবিধা করবেন না। শব্দদূষণ রোধে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া মাইক ভাড়া দেয়া যাবে না। ইটভাটার মাটি রাস্তার ওপর থাকবে না। অবৈধ যানবাহন রুখতে বাসমালিকরা শহরে টাউন সার্ভিস বাস চালু করতে পারবেন। পৌরসভার মধ্যে ইজিবাইক সংখ্যা নির্ধারণ করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফিডার রোডে চলাচল করতে হবে। তবে, কোনো শিশুকে ইজিবাইক চলাচলে অনুমতি দেয়া যাবে না। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পরিকল্পিত নগরী তৈরি করতে প্রতি তিন মাস পর প্রতিবেদন হাইকোর্টে জানাতে হবে। প্রতি বছর দেশে ১২ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন বলেন, অবৈধ যানবাহন চলাচলে কেউ দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে হত্যা মামলা দেয়া হবে। যারা সহযোগী তাদেরও মামলায় আসামি করা হবে। মালবাহী যানে লোক পরিবহন করবেন না। মালিক সমিতি শহরে জনগণের সুবিধার্থে টাউন সার্ভিস বাস চালু করতে পারেন।
চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, পৌরসভার মধ্যে হাজরাহাটি ও বেলগাছিসহ বিভিন্ন স্থানে ইজিবাইক চলাচলে এখন রাস্তার কোনো সমস্যা নেই। ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৮৩ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। এবার আরও ২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। যা আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ হবে। আগামী ১ বছর পর ট্রাক টার্মিনাল হবে আশা করছি। তবে যশোর ও ঝিনাইদহে ইজিবাইক চলাচলে পৌরসভা থেকে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করেছে। আমি আশা করবো চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাতেও একইভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলাচলের জন্য সকলেই সহযোগিতা করবেন।
চুয়াডাঙ্গার পাঁচটি আঞ্চলিক মহাসড়ক হচ্ছে- চুয়াডাঙ্গার কুলপালা থেকে বদরগঞ্জ পর্যন্ত, চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া ভায়া আলমডাঙ্গা সড়ক, চুয়াডাঙ্গা-হাসাদহ সড়ক, চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর থেকে আলমডাঙ্গা ভায়া আসমানখালী সড়ক এবং চুয়াডাঙ্গা হতে আটকবর ভায়া দামুড়হুদা সড়ক। মতবিনিময় সভায় অবৈধ যানবাহনের ওপর একটি সচিত্র প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) সচিত্র কুমার দাস। এ সময় সহকারী কমিশনার পাপিয়া আক্তার, ফখরুল ইসলাম ও সিদ্দিক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।