পরকীয়ার বলি হলো গৃহবধূ মেরিনা

দামুড়হুদার রামনগরে স্বমীর বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার: স্বামীর পরকীয় বাধা দেয়ায় লাশ হলেন দামুড়হুদার রামনগর গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মেরিনা (২৪)। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। মেরিনাকে নির্যাতনের পর  বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দামুড়হুদা থানায় একটি মামলা হয়েছে। মেরিনার লাশের আজ ময়নাতদন্ত করা হবে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের রামনগর হঠাতপাড়ার শহর আলীর ছেলে রনির সাথে আলমডাঙ্গা উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের শালিকা গ্রামের আয়ুব আলীর মেয়ে মেরিনা খাতুন ওরফে মেরীর বিয়ে হয় বছর ছয়েক আগে। তাদের ঘরে রয়েছে আড়াই বছর বয়সী মেয়ে মীম। বর্তমানে মেরিনা আবার ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আর মাত্র কদিন পরেই তার সন্তান প্রসবের কথা ছিলো বলে চিকিসক জানিয়েছিলেন। এরই মধ্যে গতকাল রোববার বিকেলে মেরিনার লাশ উদ্ধার করলো পুলিশ।

মেরিনার পিতা আয়ুব আলী ও ভগ্নিপতি জালাল উদ্দিন মাথাভাঙ্গায় অভিযোগ করে বলেন, রামনগরের পার্শ্ববর্তী গোপালপুর গ্রামের ময়না নামের একজনের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে রনির। এ নিয়ে প্রায়ই মেরিনার সাথে স্বামী রনির ঝইঝগড়া হতো। কিছু বলতে গেলেই রনি মারধর করতো মেরিনাকে। মেরিনার পিতা ও ভগ্নিপতি বলেছেন, পরকীয়ায় বাধা দেয়ার কারণেই নির্যাতন ও বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরিনাকে হত্যা করেছে রনি। নিহতের পিতা আয়ুব আলী আরও জানান, প্রায়ই তার জামাই রনি যৌতুকের টাকা দাবি করে আসছে।

গতকাল রোববার বিকেলে পুলিশ মেরিনার লাশ উদ্ধার করে। মেরিনার শ্বশুর শহর আলী জানান, সকালে মেরিনাকে ডাকাডাকি করে না পেয়ে ঘরে ঢুকে তাকে মৃত অবস্থায় দেখা যায়। রনি ঘরে ছিলো বলে জানালেও পরক্ষণে বলেন রনি ভোররাতেই বাইরে চলে গেছে। রনির পরিবারের কথায় নানা অসঙ্গতি দেখা দেয়। মেরিনার পিতা আয়ুব আলী বলেন ভোররাতেই মোবাইলফোনে মেরিনার মৃত্যু সংবাদ দেয় রনি। পরে রামনগরে গিয়ে রনিকে আর পাওয়া যায়নি। সে পুলিশের ভয়ে গাঢাকা দেয় বলে এলাকাসূত্রে জানা গেছে। তার পরিবারের লোকজন বলেছে, মেরিনা আপনমনেই মারা গেছে। তবে লাশ উদ্ধারের সময় মেরিনার মাথা ও কাঁধে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রনির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, যে খাটে মেরিনার লাশ ছিলো সেই খাটের বিছানা ও লেপ-কাঁথা ছেঁড়াছুটো। তাতে স্পষ্ট যে মেরিনাকে মেরে ফেলার সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিছানায় ধস্তাধস্তি হয়েছে।

দামুড়হুদা থানার এসআই মামুন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সুরোতহাল রিপোর্ট প্রণয়নের পর লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নেন। লাশের সাথে মেরিনার পিতাপক্ষের লোকজনকে দেখা গেলেও স্বামীপক্ষের কাউকে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। দামুড়হুদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব হাবিব মাথাভাঙ্গাকে জানান, নিহতের বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। তিনি আরো জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ দিকে মেরিনা হত্যার অভিযোগ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সদস্যরা সরেজমিনে রামনগর গ্রামের যান।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *