পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে অনিশ্চয়তা

স্টাফ রিপোর্টার: সরকারের মেগা প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতু চালুর দিন থেকে সেতুর ওপর দিয়ে রেল যোগাযোগ চালুর নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে এ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু এতোদিন পরেও পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ চালুর বিষয়টি অনিশ্চিত রয়ে গেছে।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার মধ্যে চীন সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার কথা রয়েছে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। বাকি ১০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেয়ার কথা। চীন সরকারের পক্ষে এই টাকা দেয়ার কথা রয়েছে চায়না এক্সিম ব্যাংকের।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, চার শর্তে আটকে আছে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন। কিন্তু শর্তগুলোর চূড়ান্ত তালিকা এখনো চীন থেকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) পাঠানো হয়নি। তাই পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে এখনো অনিশ্চয়তা কাটছে না। এরই মধ্যে প্রকল্প এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে গত সপ্তাহে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (ইআরইসি) ১৫ সদস্যের একটি দল ঢাকায় আসে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়। ঢাকা থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ঢাকাসহ ছয় জেলার জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জমি অধিগ্রহণ করা হলেও বাকি চার জেলার জমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো শুরুই হয়নি।

জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়নে চায়না এক্সিম ব্যাংক প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো চূড়ান্ত চুক্তি করেনি দেশটি। এমনকি এ সংক্রান্ত ঋণ চীনের এক্সিম ব্যাংকের ২০১৭ সালের বাজেটেও রাখা হয়নি। এতে অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের ঋণপ্রাপ্তি। পদ্মা রেলসেতু নির্মাণে পাঁচ বছরে এক্সিম ব্যাংকের ৩১৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার ঋণ দেয়ার কথা। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পে ৮০ কোটি ডলার প্রয়োজন। এ জন্য দ্রুত ঋণচুক্তি সম্পন্ন করতে জোর তৎপরতা চালায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। ফেব্রুয়ারিতে চীনে প্রতিনিধিদল পাঠায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। সে সময় প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হলেও আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার মধ্যে চীন সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার কথা রয়েছে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। বাকি ১০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেয়ার কথা। চীন সরকারের পক্ষে এই টাকা দেয়ার কথা রয়েছে চায়না এক্সিম ব্যাংকের। রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চায়না এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে এই প্রকল্পের অর্থ ছাড় তো দূরের কথা, এখনো পর্যন্ত চুক্তিটি পর্যন্ত হয়নি। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, যেখানে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৪১ শতাংশ, সেখানে জমি অধিগ্রহণ ছাড়া পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি। জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে সরকারের নিজস্ব টাকায়। ফলে পদ্মা বহুমুখী সেতু চালুর দিন থেকে রেল সংযোগ চালুর বিষয়টি অনেকটাই অনিশ্চিত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।