নিয়মিত তদারকি না করায় বাজার মনিটরিং কমিটিকে দুষলেন ক্রেতারা

 

জহির রায়হান সোহাগ: কোরবানির ঈদের আগে চট্টগ্রামের মসলার বাজারে দামের যে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে তার আঁচ মফস্বল জেলাগুলোতেও পড়েছে। বিভিন্ন ধরনের মসলার পাশাপাশি তেল, লবণ, পোলাও চাল সবকিছুর দামই বেড়েছে ঈদের আগে।

গতকাল শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪শ থেকে ১৬শ টাকায়, দারুচিনি প্রতিকেজি ২৩০ টাকা, লবঙ্গের কেজি ১৬শ টাকা। যে খোলা সয়াবিন তেল ১৫ দিন আগেও ৭৮ টাকা লিটার বিক্রি হয়েছে এখন তা বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৮৮ টাকায়, প্রতিকেজি লবণের দাম ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা। খোলা চিনি প্রতিকেজি ৬৮ টাকা। চিনির দাম বাড়লেও দেশি চিনির দেখা নেই বাজারে।

দাম বেড়েছে সব ধরনের ডালের কলাই ১২০ টাকা মসুর ১৪০ টাকা এবং মুগের ডাল ১শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে গত ১৫ দিন আগের দাম হিসেব করলে সবজির বাজার চুয়াডাঙ্গায় অনেকটাই স্থিতিশীল। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২শ টাকায়, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি, আলু ও বেগুনসহ আর যেকোনো ধরনের সবজি কিনতে প্রতি কেজিতে গুনতে হচ্ছে গড়ে ৪০ টাকা। পোলাও চাল প্রতিকেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১শ থেকে ১২০ টাকায়। এছাড়া মোটা থেকে সরু চাল প্রকারভেদে দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ থেকে ১১ টাকা।

চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারের মুদিদোকানি সালাউদ্দিন জানালেন, ঢাকা চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার থেকে যে দামে পণ্য কেনা হচ্ছে সে অনুযায়ী বিক্রি করা হচ্ছে। এই যেমন বোতলজাত সয়াবিন তেল, ক’দিন আগেও ৫ লিটারের ক্যান বিক্রি হয়েছে ৪৪০ টাকায় এখন দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮০ টাকায়। তবে সীমিত লাভে প্রতিটি পণ্য বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

কোরবানির ঈদে মসলাপাতির দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা। গতকাল দুপুরে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারে আসেন আবুল কাশেম। লবণ কেনার সময় দোকানির সাথে দাম নিয়ে বাগবিতণ্ডা করতে দেখা গেল তাকে। জানালেন, লবণ কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে যা কিছুদিন আগেই ছিলো ৩০ থেকে ৩২ টাকা। তবে লবণের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, একদিন চিনির চেয়ে লবণের দাম বেশি হবে বলে ধারণা করছেন তিনি। তিনি আরও জানালেন, সুষ্ঠু বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় কিছু কিছু বিক্রেতা ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বাজার মনিটরিঙে দায়িত্বে থাকা কাউকে গত দু’দিন চুয়াডাঙ্গার বাজার ঘুরে দেখা যায়নি। এছাড়া প্রত্যেক দোকানে মূল্য তালিকা টানানো যে আইন আছে কয়েকটি বাদে অধিকাংশ দোকানেই তা অনুপস্থিত।

এ বিষয়ে জেলা মার্কেটিং অফিসার শহীদুল হকের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে কোরবানি ঈদে হঠাৎ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসসহ মসলাপাতির দাম বৃদ্ধির বিষয়টি অযৌক্তিক বলে মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা। নিয়মিত বাজার মনিটরিংসহ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।